ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: বালির বখরা নিয়ে বিবাদের জেরে বোমাবাজি হয় কাঁকড়তলায়। আর এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরানো হল বীরভূমের কাঁকড়তলা থানার OC পূর্ণেন্দুবিকাশ দাসকে। দুবরাজপুরের সার্কেল ইনস্পেক্টর শুভাশিস হালদারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 


গতকাল কাঁকড়তলার জামালপুরে, বালি খাদানের টাকার ভাগ নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। তার জেরেই এই বোমাবাজির ঘটনা। বোমার আঘাতে জখম হন একজন। নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে, বীরভূমে বালি পাচার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। গতমাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি বীরভূমের ডিএমকে ডাকছি, বিধান। হঠাৎ এমন কী হল যে বালি সবচেয়ে বেশি পাচার ওখানে হচ্ছে? যেখানে ঘাটতি আছে, আমি তোমাকে সময় দিচ্ছি , ৭ দিনের মধ্যে এগুলোকে উদ্ধার কর।'' আর এই বালির বখরা নিয়ে বিবাদের জেরে বোমাবাজির ঘটনায় সরানো হল বীরভূমের কাঁকড়তলা থানার OC পূর্ণেন্দুবিকাশ দাসকে। 


তবে বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের ২ পক্ষের দ্বন্দ্বেই এই ঘটনা। দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ সাহা বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের ২ গোষ্ঠীর মধ্য়ে যে ব্য়াপক বোমাবাজি। অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামী, কাজল শেখের অনুগামীদের মধ্য়ে যে ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে, তোলাবাজি নিয়ে যে দুর্নীতি, সেটা নিয়ে বোমাবাজিতে একটা মানুষের পা উড়ে যাচ্ছে। ধিক্কার জানাই তৃণমূল কংগ্রেসকে। যারা প্রশাসনে থেকে, এই ধরনের অবৈধ কাজকে যারা মদত দেয়।''

বীরভূমের বিভিন্ন প্রান্তে, অজয় বা ময়ূরাক্ষীর চর থেকে বালি তোলা নতুন কিছু নয়, বালি পাচার রুখতে অভিযানে নামেন খোদ জেলাশাসক। কিন্তু, তারপরও, নদীর বুকে গর্ত করে রমরমিয়ে বালি তোলা চলছে। আর এই বালি খাদানের টাকার ভাগ নিয়েই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বলে অভিযোগ।  তার জেরেই সোমবার রাত থেকে শুরু হয় বোমাবাজি। যা চলে মঙ্গলবার সকালেও। ঘটনার পরই এলাকায় চলে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, গতকালের ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেআইনি বালি পাচার রুখতে পুলিশ লাগাতার অভিযান চালাবে বলে SP জানিয়েছেন। এই ঘটনা প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, "দেখুন, এটা তৃণমূলের কোনও ব্য়াপার নেই। বিভিন্ন জায়গায় নানারকম দুষ্কৃতীরা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা তোলার চেষ্টা করে, পয়সা তোলার চেষ্টা করে, প্রশাসন সক্রিয় আছে। দেখে প্রশাসন। এটায় দলের (তৃণমূল) কোনও ব্য়াপার নেই। কোনও গোষ্ঠী, কোনও লোক হয়তো, কোনও ক্লাব হতে পারে, তারা হয়তো এই টাকাটা।''


আরও পড়ুন: Kalyan Banerjee On Fish Supply 'বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, মাছে-ভাতে বাঙালি' মাছের যোগানের পক্ষে সওয়াল তৃণমূল সাংসদের