আবির ইসলাম, বীরভূম: বীরভূমের (Birbhum) ইলামবাজার (Ilambazar) জয়দেবের অজয় নদীর তীরে বিধি নিষেধ মেনে চলছে পুণ্যস্নান। মন্দির থেকে অজয় নদীর (Ajay River) ঘাট পর্যন্ত পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলার দল। পাশাপাশি অজয় নদীর তীরে ছোট করে বসেছে মেলা। যদিও অন্যবারের তুলনায় অনেকটাই পুণ্যার্থী সংখ্যা অনেকটাই কম।
ভয়াবহ করোনা (Corona) পরিস্থিতি। উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা। তবু তার কোনও ছাপ দেখা গেল না, গঙ্গাসাগর থেকে জয়দেবের কেঁদুলি মেলায় আসা পুণ্যার্থীদের মধ্যে। মেলা হল। হল পুণ্যস্নানও। মাস্ক, দূরত্ববিধিকে কার্যত বিসর্জন দিয়ে বিধিভঙ্গ চলল সমানতালে। করোনা ঠেকানোর সচেতনতা না থাকলেও, প্রশ্নের মুখে উত্তর হাজির। শুক্রবার বোলপুরের মহকুমাশাসক জানিয়েছিলেন, বীরভূমে এবার জয়দেব কেঁদুলির মেলা হবে না। ৪ দিন কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিন্হা জানান, কোভিড বিধি মেনে, ছোট করে মেলা হবে। শুক্রবার ভোর থেকেই অজয়ের তীরে পুণ্যার্থীদের ভিড়। জয়দেবের মন্দিরে অবশ্য বিধি মেনেই পুজো দেন পুণ্যার্থীরা। নদীর ঘাট থেকে মেলা চত্বরে প্রশাসনের তরফে সতর্ক করার পাশাপাশি স্যানিটাইজ করা হয়।
প্রতি বছরই মকর সংক্রান্তি তিথিতে ইলামবাজার ব্লকের জয়দেব গ্রামে অজয় নদের চরে মেলা বসে। এই মেলা মূলত আউল, বাউল, ফকিরদের জন্য বিখ্যাত। শতাব্দী প্রাচীন এই মেলা মূল বৈশিষ্ট্য ধর্ম প্রচার। এখানেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন কবি জয়দেব। তিনি ছিলেন রাজা লক্ষণ সেনের সভাকবি। ইতিহাস থেকে জানা গিয়েছে ১৬৮৩ সালে বর্ধমানের রাজার উদ্যোগে জয়দেবের তৈরি হয় রাধা বিনোদের মন্দির। কথিত আছে কবি জয়দেব গঙ্গা স্নানের জন্য কয়েকশো কিলোমিটার পাড়ি দিতেন সংক্রান্তি তিথিতে। কোন এক বছরে শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি গঙ্গা স্নান করতে যেতে পারছিলেন না। সে সময় তাঁকে স্বপ্নাদেশ দেওয়া হয়। তিনি জানতে পারেন জয়দেবের অজয় নদে গঙ্গা মিলিত হয়ে আসবেন কদমখণ্ডির ঘাটে। অনেকেই মনে করেন তারপর থেকেই মকর সংক্রান্তি তিথিতে জয়দেবের অজয় নদের ঘাটে পুণ্যস্নান শুরু হয়।
আরও পড়ুন: North Dinajpur News: অমলের তৃণমূলে ফেরার পথে কাঁটা বিছিয়ে মমতাকে চিঠি জেলার আট বিধায়কের