গোপাল চট্টোপাধ্যায়, নানুর: এক দশক আগে খুন হয়েছিলেন নানুরের (Nanoor) সিপিএম বিধায়ক আনন্দ দাস (CPM MLA Ananda Das Murder)। সেই মামলায় অভিযুক্ত ৪৩ জন তৃণমূল (TMC) কর্মী-সমর্থকই বেকসুর খালাস পেয়ে গেলেন আদালতে। তাতে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলছেন সিপিএম (CPM) নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, বাড়ি থেকে বার করে নিয়ে গিয়ে খুন করা হল এক জনকে। অথচ অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে গেলেন। বাংলায় আইনের শাসন নেই বলেই এমনটা সম্ভব হল বলে দাবি বিজেপি-রও (BJP)।
আনন্দ দাস খুনের মামলায় মোট ৪৮ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। বিচারাধীন অবস্থায় তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন মারা গিয়েছেন। সোমবার সল্টলেক বিশেষ আদালত বাকি ৪৩ জনকে বেকসুর খালাস করেছে। আদালতের এই রায়েই ক্ষুব্ধ লালশিবির। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম বলেন, ‘‘এই রায় অত্যন্ত দুঃখজনক। বাড়ি থেকে বার করে নিয়ে গিয়ে নির্মম ভাবে খুন করা হয়েছিল প্রাক্তন বিধায়ক আনন্দ দাসকে। তৃণমূল কর্মীরা প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করেছিল। তার পরেও খালাস পেয়ে গেল সকলে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছি। এ নিয়ে অবশ্যই পরবর্তী পদক্ষেপ করব আমরা। দোষীদের শাস্তি দিয়ে তবে ছাড়ব।’’
৪৩ জন বেকসুর খালাস পেয়ে যাওয়ায় তিনি স্তম্ভিত বলে জানিয়েছে বিজেপির বীরভূম জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহাও। তিনি বলেন, ‘‘সত্যিই অবাক হচ্ছি। আমরা কোন পশ্চিমবাংলায় বাস করছি! এখানে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। এখানে শুধু তৃণমূলের শাসন চলছে। যাঁরা বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত, ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে এমন রায় দিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। তৃণমূল করেন বলেই বেকসুর খালাস পেলেন ওই ৪৩ জন। বাংলায় এক দিন নিশ্চয়ই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। নতুন করে আবার খাতা খোলা হবে সে দিন।’’
কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ কানে তুলতে নারাজ নানুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘২০১০ সালে আনন্দ দাস খুনের মামলায় 48 জন তৃণমূল কর্মীকে ইচ্ছাকৃত ভাবে দোষারোপ করা হয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেস আইনের প্রতি আস্থা রাখে। আজ প্রমাণিত হয়ে গেল, ওই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগাযোগ ছিল না। তাই ৪৩ জনই খালাস পেলেন। দুঃখের বিষয় মারা যাওয়া পাঁচ জন তা দেখে যেতে পারলেন না।’’