রামপুরহাট : 'খেলা হবে অপেক্ষা করুন।' দিনকয়েক আগে এমনই কথা শোনা গিয়েছিল বীরভূমের রাজনীতিতে বরাবর অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধী গোষ্ঠী বলে পরিচিত কাজল শেখের মুখে। আর এবার 'বীরভূম জেলার বুকে জোড়া ফুল ছাড়া অন্য কিছু থাকবে না', বলে ফতোয়া জারি করলেন শাসক নেতা। দলীয় সাংসদকে পাশে বসিয়েই এই মন্তব্য করেন তিনি।


রামপুরহাটে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। মঞ্চে ছিলেন শতাব্দী রায়। তাঁর সামনেই কাজল বলেন, '২৪-এর নির্বাচনে সেই পরিযায়ী পাখিদের মতো অন্য রাজ্য থেকে অবশ্যই টাকার বস্তা নিয়ে আসবে ভেদাভেদ সৃষ্টি করার জন্য। জাতপাত নিয়ে রাজনীতি করার জন্য। এখানকার শুভবুদ্ধি-সম্পন্ন মানুষকে জ্ঞান দেব না। টাকা দিলে টাকা নেবেন। নেওয়ার পরে বেঁধে রাখবেন। তার পরে থানায় খবর দেবেন। বীরভূম জেলার বুকে জোড়া ফুল ছাড়া অন্য কিছু থাকবে না। বীরভূম জেলার বুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া অন্য কিছু থাকবে না।' 


এনিয়ে পাল্টা সুর চড়িয়েছে বিজেপি। বীরভূম সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, 'বড় বড় ভাষণ দিয়ে, বড় বড় কথা বলে কাজল শেখ হাওয়া নিতে চাইছেন। আর কাজল শেখের পাশে দাঁড়িয়ে ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছেন শতাব্দী দিদিমণি। স্বাভাবিকভাবেই কাজল শেখ এখন অনেক রকম বক্তব্য রাখবেন। বিজেপি থাকবে না, সিপিএম-কংগ্রেস থাকবে না। কোনও দল থাকবে না, শুধু তৃণমূল কংগ্রেস থাকবে। সমস্ত ঠিক করার দায়িত্ব তো ওঁকে দেওয়া হয়নি। তার যদি এধরনের বক্তব্য হয়, বীরভূমের মানুষ আগামী লোকসভা নির্বাচনে এর নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্টভাবে জবাব দেবেন।'


প্রসঙ্গত, একসময় খেলা হবে স্লোগান শোনা যেত বীরভূমের তৎকালীন দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের গলায়। যার নামে বীরভূমে বাঘে-গরুতে একঘাটে জল খেত, গরুপাচার মামলায় তাঁর ঠিকানা এখন তিহাড়। আর তাঁর অনুপস্থিতিতে, রামপুরহাটে দলের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান থেকে বিরোধীদের কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন কাজল শেখ ।তিনি বলেন, 'কথা তো হবে, দেখা তো হবে, খেলা তো হবে। অপেক্ষা করুন। খেলা হবে অপেক্ষা করুন।'


সম্প্রতি, নানুুরের দলীয় কার্যালয়ে সাদা রং দিয়ে মুছে ফেলা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের ছবি। কাজল শেখ জেলা পরিষদের সভাধিপতি হওয়ার পর, পদত্যাগ করেছেন খয়রাশোলের ব্লক সভাপতি অনুব্রত ঘনিষ্ঠ কাঞ্চন অধিকারী। বীরভূমে এহেন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এবার, অনুব্রত বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা কাজল শেখের মুখে শোনা যাচ্ছে একের পর এক হুঁশিয়ারি।