কলকাতা: প্রকাশ্য রাস্তায় বোমা ছুড়ে খুন শাসকদলের নেতা। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জতুগৃহ হয়ে উঠল তাঁর গ্রাম, যাতে ১০ জনের প্রাণ গেল। তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি যখন উত্তাল, সেই সময় বীরভূমের (Birbhum News) রামপুরহাটের বকটুইয়ের ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগই নেই হলে জানিয়ে দিলেন তৃণমূলের (TMC) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর সাফ যুক্তি, আগুনে মৃত্যুর ঘটনা দুঃখের, অবাঞ্ছিত। কিন্তু এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।


রামপুরহাটের (Rampurhat News) পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশে ইতিমধ্যেই রামপুরহাট রওনা দিয়েছেন রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ এবং রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। দলের নিহত উপপ্রধান ভাদু শেখের দাদাও খুন হয়েছেন বলে জানান তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু গোটা ঘটনায় রাজ্য সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশমন্ত্রীর পদ থেকে মমতার ইস্তফার দাবি তুলেছে তারা।



কিন্তু মঙ্গলবার টুইটারে কুণাল জানিয়ে দেন, রামপুরহাটের ঘটনায় মমতার সরকার যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। ওসি ক্লোজড এবং এসডিপিওকে ইতিমধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে বলে জানান কুণাল (Kunal Ghosh)। একই সঙ্গে জ্ঞানবন্ত সিংহ, মীরজ খালিজ এবং সঞ্জয় সিংহকে নিয়ে তিন সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল গড়া হয়েছে, যথাযথ তদন্ত এগোবে বলে জানান। নেহাত দুর্ঘটনা, প্রতিশোধ নাকি গোটাটাই ষড়যন্ত্র, সব খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন।


আরও পড়ুন: Birbhum TMC Leader Murder: তৃণমূল নেতা খুনের পর উত্তপ্ত রামপুরহাট, ১০টি বাড়িতে আগুন, উদ্ধার ১০ দেহ


কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিশোধ থেকে এমন ঘটনা ঘটানো হয়নি বলেই মত কুণালের।  কুণাল এ দিন টুইটারে লেখেন, ‘রামপুরহাটে আগুনে মৃত্যু। দুঃখের। অবাঞ্ছিত। কিন্তু এর সঙ্গে রাজনীতিক সম্পর্ক নেই। স্থানীয় গ্রাম্য বিবাদ। স্থানীয় তৃণমূল উপপ্রধানকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়। তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। (তাই)গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। রাতে আগুনের ঘটনা ঘটে। পুলিশ, দমকল ব্যবস্থা নিয়েছে।’



রামপুরহাটের ঘটনায় সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁর ইস্তফা দেওয়া উচিত বলে মন্তব্যও করেন। এথ বড় ঘটনা ঘটে গেল, অথচ পুলিশ-প্রশাসন জানতে পারল না, তা কী ভাবে সম্ভব প্রশ্ন তুলেছেন সুকান্ত। কিন্তু কুণালের কথায়, ‘মৃত্যু দুঃখের। এই ভাবে মৃত্যু আরও দুঃখের। যাঁরা এ নিয়ে রাজনীতি করছেন, তাঁদের রাজ্য থেকেও আমাদের প্রায়শই মৃতদেহ বাংলায় ফিরিয়ে আনতে হয়। বিজেপি এবং এনডিএ শাসিত রাজ্যে নিয়মিত অপমৃত্যু এবং হত্যা চলছে। বাংলার পরিস্থিতি ভাল। তদন্ত চলছে।’


সোমবার জাতীয় সড়কের ধারে দোকানে চা খাওয়ার সময় তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। তাতে মারা যান তিনি। তার পরই তাঁর অনুগামীরা এলাকার ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, রাতভর তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। তাতে ছয় মহিলা, দুই শিশু-সহ ন’জনের দেহ উদ্ধার হয়। দমকল জানিয়েছে, আগুনে ঝলসে মাংসপিণ্ড প্রায় হয়ে গিয়েছিল দেহগুলি।