পার্থপ্রতিম ঘোষ, সন্দীপ সরকার ও আবির দত্ত, রামপুরহাট: বীরভূমের ঘটনায় (Birbhum Violence) রাজনৈতিক তরজা চরমে। কিন্তু গোটা ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। কারণ রামপুরহাটের বগটুই (Rampurhat Fire) গ্রামের যে জায়গায়, বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছে, তার অদূরেই রয়েছে এসডিপিও  বাংলো এবং রামপুরহাট থানা। তা সত্ত্বেও পুলিশের বিরুদ্ধে দেরিতে পৌঁছনোর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন কোথায় ছিল পুলিশ?


বগটুইয়ের ঘটনার ভয়াবহতার ঘিরে দোষারোপ পাল্টা দোষারোপের পালা চলছেই। কিন্তু ঘটনার ভয়াবহতার রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারছেন না স্থানীয় মানুষ। কারণ সোমবার সওয়া ৮টা নাগাদ তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধান ভাদু শেখের উপর হামলার খবর কানে পৌঁছতেই, উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে। তার পর এক ঘণ্টাও কাটেনি, রাত ৯টা নাগাদ পর পর কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।


কিন্তু যে ১১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে যেখানে ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়, সেখান থেকে রামপুরহাট থানার দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। আর মিনিট দুয়েকের হাঁটা দূরত্বে অবস্থিত এসডিপিও বাংলো। আর এই এসডিপও বাংলোর এক কিলোমিটারের মধ্যে বগটুই গ্রামের ওই জায়গা, যেখানে পর পর বাড়িগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। গাড়ি নিয়ে পৌঁছতে সময় লাগে তিন মিনিট।


আরও পড়ুন: PM Modi on Birbhum Violence: যারা এই হত্যালীলা ঘটিয়েছে, তাদের যেন বাংলার মানুষ ক্ষমা না করে, বগটুইয়ের ঘটনা নিয়ে বললেন প্রধানমন্ত্রী


পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন


সোমবার তৃণমূলের উপ প্রধানকে খুনের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল। তাই সেখান থেকে তিন মিনিটের দূরত্বে গ্রামে যখন আগুন লাগিয়ে হত্যালীলা চলছে, তখনই সেখানে পুলিশ পৌঁছল না কেন? স্থানীয়রা তো বটেই, বিভিন্ন মহল থেকেও এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।


স্থানীয় বাসিন্দা সদর আলমও এ নিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। এবিপি আনন্দের ক্যামেরার সামনে ওই দিনের ঘটনার কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে আসে তাঁর। সেই অবস্থাতেই বলেন, “পুলিশ গাফিলতি করেছে। আগে এলে মারা যেত না। নিরীহ মেয়েগুলো মারা গেল।”


বগটুই গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, বেশ কিছুক্ষণ পর পুলিশ এলেও, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অগ্নিকাণ্ডে নিহত এক মহিলার কন্যা বলেন, “মা ফোনে বলছিল, ‘পুলিশ রয়েছে, তারপরেও জ্বলছি। পুলিশ কিছু করছে না’।” তাই আট-আটটি প্রাণ চলে যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠলেও, বগটুই-কাণ্ড ঘিরে এখনও বহু প্রশ্নের উত্তর অধরা।