ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, সাঁইথিয়া: বেলুনে গ্যাস ভরার সময় বিস্ফোরণ বাড়িতে। কাঠগড়ায় এক সিভিক ভলান্টিয়ার। বেআইনি ভাবে তিনি গ্যাস বেলুনের ব্যবসা করছিলেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় এক ব্যক্তিকে বেলুনে গ্যাস ভরার জন্য বাড়ি বিয়ে যান তিনি।সেই সময়ই তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে এবং ওই ব্যক্তি মারা যান বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় উত্তাল বীরভূমের সাঁইথিয়া। সাঁইথিয়া থানায় কর্মরত, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে ভাঙচুর চালান গ্রামবাসীরা। অভিযুক্ত ওই সিভিক ভলান্টিয়ার পলাতক। (Birbhum News)
রবিবার সাঁইথিয়ার বিলসা গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। সিভিক ভলান্টিয়ার দুর্গাপ্রসাদ ভট্টাচার্যর বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয়দের দাবি, বেআইনি ভাবে গ্যাস বেলুনের ব্যবসা করছিলেন দুর্গাপ্রসাদ। এদিন দুপুরে পেশায় রাজমিস্ত্রি বিপত্তারণ বাগদিকে বাড়িতে বেলুনে গ্যাস ভরার জন্য নিয়ে যান। উপরি রোজগারের জন্য বিপত্তারণও চলে যান। কিন্তু বেলুনে গ্যাস ভরার সময় হঠাৎই গ্যাসেরসিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটে, তাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ৩৬ বছরের বিপত্তারণ। (Civic Volunteer Gas Balloon Business)
বিস্ফোরণের অভিঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বিপত্তারণের শরীর। বেলুনে গ্যাস ভরার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না তাঁর। যে ঘরে বেলুনে গ্যাস ভরা হচ্ছিল, সেখানে নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। স্থানীয় থানার নজর এড়িয়ে কী ভাবে দিনের পর দিন বেলুনে গ্যাস ভরা হচ্ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে দিনের পর দিন গ্যাস বেলুনের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার? পুলিশ-প্রশাসন কি সত্যিই কিছুই জানত না? বিপত্তারণের মৃত্যুর দায় কার? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। শুধু তাই নয়, সিভিক ভলান্টিয়ারের প্রাসাদোপম বাড়ি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
এই ঘটনার পর দুর্গাপ্রসাদের বাড়িতে চড়াও হন স্থানীয়রা গ্রামবাসীরা। চলে ইঁটবৃষ্টি, ব্যাপক ভাঙচুর। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সাবের আলি খান এবং পুলিশ পৌঁছলে, তাঁদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান সকলে। অভিযুক্ত সিবিক ভলান্টিয়ার বাড়ি থেকে বেরোতে গেলে, তাঁকে বেধড়ক মারধরও করা হয়। কিল, চড়, ঘুষির পাশাপাশি, লাঠি হাতে উঁচিয়েও তেড়ে যান কয়েক জন। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। অভিযুক্তকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে বলে জানান স্থানীয়রা। নিহতের স্ত্রী জানান, তিনি রান্না করছিলেন। সেই সময় স্বামীকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় বেলুনের গ্যাস ভরতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে, যেখানে রাস্তার পাশে বেলুনে গ্যাস ভরতে দেখা গিয়েছে অভিযুক্তকে।
আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকে লাগাতার সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে। এমনকি হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট, সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার দূর্গাপ্রসাদ পলাতক বলে জানা গিয়েছে। নিহতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি, ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন স্থানীয় মানুষজন।