বোলপুর: খুনের আশঙ্কা করার পরেই বীরভূমে তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোমা! কঙ্কালীতলায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধানের বাড়িতে বোমাবাজি। আশঙ্কার কথা বলার পরদিনই কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ মামন শেখের বাড়িতে বোমা।

মালদায় খুন হয়েছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতা দুলাল সরকার। তারপরই প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন বীরভূমের  তৃণমূল নেতা মামন শেখ। গোটা জেলায় যিনি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত।


কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে খুনের হুমকির অভিযোগ উঠেছিল। এবং তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। ২ তৃণমূল নেতার নামে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন শাসক দলের উপপ্রধান। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েত অফিসে উপপ্রধানকে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার  করেছেন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি।


বীরভূমে ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের অনুগামীদের মতপার্থক্য (TMC inner Clash) বারবার শিরোনামে উঠে এসেছে। কিছুদিন আগেই সকালে হঠাৎ বাইক মিছিল করে দলীয় সমর্থকদের নিয়ে কঙ্কালীতলায় যান কাজল শেখ ঘনিষ্ঠ নানুরের বিধায়ক বিধান মাজি। সেদিন তিনি অনুগামীদের নিয়ে বৈঠক করেন কঙ্কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই বৈঠকের সময় সেখানে হাজির ছিলেন না অনুব্রত ঘনিষ্ঠ উপপ্রধান মামন শেখ। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল বীরভূমের রাজনৈতিক মহলে।


দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জন্য এলাকার উন্নয়ন থমকে রয়েছে বলে দিনকয়েক আগে মন্তব্য করেছিলেন জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ। কঙ্কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের লায়েকবাজারে, তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে বসে সভাধিপতির ওই মন্তব্য ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছিল দলে। পরে সেই কঙ্কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে এসেই এলাকার উন্নয়নের কাজ নিয়ে বৈঠক করেন নানুরের বিধায়ক এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতির ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত বিধান মাজি। ঘটনাচক্রে কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েত এলাকা নানুর বিধানসভা কেন্দ্রের আওতাধীন। ফলে, বিধায়ক বৈঠক করতেই পারেন। কিন্তু, এই একটি পঞ্চায়েত যেখানকার নেতৃত্ব তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ। কঙ্কালীতলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের হাত ধরে। 


সেখানে সর্মথকদের নিয়ে বিরাট বাইক মিছিল করে কাজল শেখের ‘ঘনিষ্ঠ’ বিধায়ক এসে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক করার পর থেকেই দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে কি অনুব্রত ঘনিষ্ঠ উপপ্রধান মামন শেখের হাত থেকে পঞ্চায়েতের রাশ নিজের হাতে নিতে চাইছেন কাজল ঘনিষ্ঠ বিধায়ক? মামন-সহ ১৭ জন পঞ্চায়েত সদস্য গরহাজির ছিলেন কাজল-ঘনিষ্ঠের বৈঠকে। সেদিন সন্ধ্যায় মামনের নেতৃত্বে তৃণমূলের মিছিল বেরোয়। এই মিছিলে পঞ্চায়েতের সদস্যরা, কর্মী ও সমর্থক সহ উপস্থিত ছিলেন মন্দিরের সেবায়েতরা। মিছিল থেকে স্লোগান উঠেছিল, 'অনুব্রত মণ্ডল জিন্দাবাদ', 'কঙ্কালীতলায় বহিরাগতদের গুণ্ডারাজ মানছি না, মানব না'!


তারপর থেকেই চর্চায় ছিলেন মামন শেখ। এবার তাঁর বাড়িতেই বোমাবাজির অভিযোগ। যে দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজেও।


আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে বের হচ্ছে তেলের মত কালো তরল! পেট্রোল নয় তো? সোনারপুরে চাঞ্চল্য