ভাস্কর মুখোপাধ্য়ায়, বীরভূম: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার বীরভূমে, গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলের বসিয়ে যাওয়া অধিকাংশ ব্লক সভাপতির ওপরই ভরসা রাখল তৃণমূল। জেলায় দলের নতুন ব্লক সভাপতিদের নাম ঘোষণা করা হল। তাতে দেখা যাচ্ছে মাত্র ৫টি ব্লকে সভাপতি বদল করেছে তৃণমূল। ১৪টি ব্লকে কেষ্টর অনুগতদের ব্লক সভাপতি পদে রেখে দেওয়া হল।


লোকসভা ভোটের আগে বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের তৈরি করে যাওয়া সংগঠনেই কি আস্থা তৃণমূলের? তৃণমূলের নতুন ব্লক সভাপতিদের নাম ঘোষণার পর এই চর্চা শুরু হল জেলার রাজনীতিতে। বুধবার সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের এক্স হ্য়ান্ডলে জেলায় জেলায় দলের ব্লক সভাপতিদের নাম ঘোষণা করা হয়। বীরভূমে তৃণমূলের মোট ২১টি সাংগঠনিক ব্লক রয়েছে। নতুন ঘোষিত নামের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ১৪টি ব্লকের সভাপতিদের পদে বহাল রাখা হল। মাত্র ৫টি ব্লকে সভাপতি বদলের পথে হেঁটেছে তৃণমূল। সভাপতি হিসেবে বহাল থাকা প্রত্য়েককেই পদে বসিয়েছিলেন গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। 


নলহাটি ২ নম্বর ব্লকে এতদিন দলের কোনও সভাপতি ছিলেন না। এই ব্লকে সিপিএম থেকে আসা রেজাউল হককে সভাপতি করল তৃণমূল। রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকে সৈয়দ সিরাজ জিম্মিকে সরিয়ে সভাপতি করা হল নীহার মুখোপাধ্য়ায়কে। যিনি সম্পর্কে তৃণমূল নেত্রীর মামাতো ভাই। সিউড়ি ১ নম্বর ব্লকে বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী ঘনিষ্ঠ রত্নাকর মণ্ডলকে সরিয়ে সভাপতি করা হল প্রশান্ত প্রসাদ লালাকে। ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকে বিধায়ক অভিজিৎ রায়কে সরিয়ে সভাপতি করা হল সূর্যকুমার মণ্ডলকে। ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকে নারায়ণ প্রসাদ চন্দ্রকে সরিয়ে সভাপতি পদে আনা হল প্রমোদ রায়কে।


অন্য়দিকে, গত বছর দুবরাজপুর ব্লকের সভাপতি ভোলানাথ মিত্রকে সরিয়ে ১৫ সদস্য়ের কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পঞ্চায়েত ভোটের পর কমিটির সদস্য়দের মধ্য়ে বিস্তর মতানৈক্য় তৈরি হয়। এবার জেলা পরিষদের খাদ্য় কর্মাধ্য়ক্ষ অরুণ চক্রবর্তী ও রফিউল খানকে আহ্বায়ক করে দুবরাজপুর ব্লকের দায়িত্ব দেওয়া হল। খয়রাশোল ব্লকের দলের সভাপতি কাঞ্চন অধিকারীকে মাথায় রেখে ৫ জনের কমিটি গঠন করা হল।    


অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বীরভূমে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল। কাজল শেখ জেলা পরিষদের সভাধিপতি হওয়ার পর আরও বেড়েছে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই চলছে সৈয়দ সিরাজ জিম্মির। 


বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, রাতারাতি তো সব পরিবর্তন করে দেওয়া সম্ভব হবে না। জেলার সাংগঠনিক পরিকাঠামো ভাল জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে খুবই ভাল রেজাল্ট হয়েছে। এটা আপনাদের সৃষ্টি। আমরা মনে করি না কোনও গোষ্ঠী আছে। কাজল প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে আছেন এবং কোর কমিটিতেও আছেন। সমন্বয় রেখে কাজ করছেন।