কলকাতা : ১৭ বছরের সম্পর্ক শেষ।  চলে গেলেন এবিপি আনন্দ-র বীরভূমের প্রতিনিধি গোপাল চট্টোপাধ্যায় (Gopal Chattopadhyay)।  অসুস্থ হয়ে ভর্তি ছিলেন অ্যাপোলো হাসপাতালে (Apollo Hospital)। সেখানেই সোমবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। রেখে গেলেন স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে। ১৯৬৮-র ৯ নভেম্বর জন্ম। বয়স হয়েছিল ৫৪।  


সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজে কমার্স নিয়ে পড়াশোনা। কিন্তু সংবাদের সন্ধানই যাঁর পেশাদার জীবনের নিয়তি, বাণিজ্য তাঁকে আকর্ষণ করবে কেন?  তাই পড়াশোনার পাঠ শেষ করে খবরের দুনিয়ার পাঠশালায় ভর্তি হয়ে যান তিনি। চাকরি সূত্রে কাজ করেছেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। ২০০৪-এ স্টার নিউজে যোগদান।  দীর্ঘ সম্পর্কের সূত্রপাত তখনই।  এরপর স্টার আনন্দ ও এবিপি আনন্দের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ফেলা।  


প্রায় ২ দশকে কত না ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্ট, কত সাহসী প্রতিবেদন! অগুন্তি মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক্সক্লুসিভ নিউজ! কোনও কোনও সাংবাদিক তাঁর কেরিয়ারে সংবাদ-সাম্রাজ্য তৈরি করে নেন।  গোপাল চট্টোপাধ্যায় ছিলেন এমনই একজন সাংবাদিক। খবর খোঁজার সীমাহীন আগ্রহ, সত্যকে আড়াল সরিয়ে সামনে নিয়ে আসা, তীক্ষ্ণ মেধা,সত্য সংবাদের প্রতি দায়বদ্ধতা, এ সব দিকচিহ্ন দিয়েই তিনি তৈরি করে নিয়েছিলেন তাঁর নিজের বলয়। 


বীরভূমের মতো রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় জেলায় খবরের স্বার্থে ছুটে গেছেন এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। কখনও পা বাড়িয়েছেন জেলার বাইরেও। যে অ্যাসাইনমেন্টই থাক, গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিবেদন তার সারবত্তাটুকু তুলে আনত। সবসময়। বঙ্গ রাজনীতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে নেতাদের সম্পর্কে ওঠাপড়া থাকে। সদালাপী, উষ্ণ হৃদয়ের, আপাদমস্তক সত্‍ এই মানুষটিরও হয়ত সে সব অভিজ্ঞতা ছিল। তবে পেশাদারিত্বের সূত্রে সব  শিবিরের নেতাদের থেকেই সম্মান আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি।  


পরের পর লোকসভা, বিধানসভার ভোট কভার করেছেন। এবার পুরভোট যখন দরজায় কড়া নাড়ছে, সেই সময়ই বুম মাইক-টা চিরতরে তুলে রাখতে হল গোপালদা?  কোনও কোনও শূন্যস্থান পূরণ হয় না। ঠিক যেমন, আর কেউ কোনওদিন বলবে না, গোপাল চট্টোপাধ্যায়, এবিপি আনন্দ, বীরভূম