আবির দত্ত, আবির ইসলাম, বীরভূম : গরুপাচারকাণ্ডে ফের সিবিআই তত্পরতা। বোলপুরে একযোগে তৃণমূল কাউন্সিলর-সহ তিন অনুব্রত ঘনিষ্ঠের বাড়িতে হানা সিবিআইয়ের। আজ সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বোলপুরের শুঁড়িপাড়ায় ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান চার সিবিআই অফিসার।
কার কার বাড়ি সিবিআই হানা
আজ সকাল ঠিক সাড়ে ৭টা । কাউন্সিলরের বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুরু হয়েছে তল্লাশি। কাউন্সিলরের বাড়ির কিছুটা দূরে তৃণমূল কর্মী সুদীপ রায় ও বোলপুরের উকিল পট্টিতে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ দোলনকুমার দে-র বাড়িতেও চলছে সিবিআই অভিযান। সিবিআই সূত্রে দাবি, গরুপাচার মামলার তদন্তে উঠে এসেছে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ এই তিনজনের নাম। সেই কারণেই অভিযান। দাবি সিবিআই সূত্রে।
এর আগে কোথায় কোথায় হানা
বোলপুরের কালিকাপুরে বিদ্যুৎবরণের বাড়িতে কয়েকদিন আগে হানা দেয় সিবিআই। প্রায় দেড়ঘণ্টা ধরে বিদ্যুতের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই অফিসাররা। সিবিআই সূত্রে দাবি, বিদ্যুৎবরণ চিকিত্সার জন্য কলকাতায় গিয়েছেন বলে তাঁর স্ত্রী জানান। একসময় বোলপুর পুরসভার গাড়ির খালাসি হিসেবে কাজ করতেন বিদ্যুৎবরণ। ২০১১-র পালাবদলের পর তাঁর চাকরি পাকা হয়। সেই থেকে উত্থান। স্থানীয় সূত্রে দাবি, অনুব্রতকে বাবা বলে ডাকতেন বিদ্যুৎ। অনুব্রত-কন্যা সুকন্যার সঙ্গে তিনি ২টি সংস্থার জয়েন্ট ডিরেক্টর। দাবি সিবিআই সূত্রে। গরুপাচারের টাকাতেই কি বোলপুর পুরসভার কর্মী বিদ্যুৎবরণের বিপুল সম্পত্তি, খতিয়ে দেখছে সিবিআই। বোলপুর পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুরে বিদ্যুৎবরণের ৩টি পেল্লায় বাড়ি, সঙ্গে একাধিক জমিরও হদিশ মিলেছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার জেলে গিয়ে প্রথমবার অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করে CBI। তবে তিনি সহযোগিতা করছেন না বলে, সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন এক অফিসার। অনুব্রত মণ্ডলের আগে, সায়গল হোসেনকেও জেরা করা হয়। সূত্রের খবর, অনুব্রতর কাছে সম্পত্তির উৎস সম্পর্কে ও সায়গলের কাছে গরু পাচারকাণ্ডে টাকার লেনদেন নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। একই জেলে রয়েছেন তাঁর এক সময়ের দেহরক্ষী ও গরু পাচার মামলায় ধৃত সায়গল হোসেনও। সূত্রের খবর, এদিন সায়গলের থেকে জানতে চাওয়া হয় গরু পাচারের টাকা কীভাবে লেনদেন হত? পাচারকারীদের সঙ্গে ফোনে তিনি কী কথাবার্তা বলতেন? এদিন সায়গলের পর অনুব্রতকেও জেরা করে CBI। সূত্রের দাবি, মূলত বেনামি সম্পত্তির উৎসের বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁর সঙ্গে গরু পাচারকারীদের কোনও যোগাযোগ ছিল কি না? যদিও, সব প্রশ্নের উত্তরই অনুব্রত কার্যত এড়িয়ে গেছেন বলে CBI সূত্রে দাবি করা হচ্ছে।