প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় সাসপেন্ড সিবিআইয়ের ২ অফিসার সহ ৪। সাসপেন্ড ২ তদন্তকারী অফিসার, দুই কনস্টেবল। সাসপেন্ড করা হয়েছে ভাদু-খুনের তদন্তকারী অফিসার রাহুল প্রিয়দর্শীকে। বগটুইকাণ্ডের তদন্তকারী অফিসার বিলাস মাধঘুটও সাসপেন্ড।


সাসপেন্ড করা হয়েছে লালনের পাহারার দায়িত্বে থাকা ২ কনস্টেবলকেও । প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু সিবিআইয়ের, খবর সূত্রের। সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন মৃত্যু হয় লালন শেখের। লালন শেখকে খুনের অভিযোগে এফআইআরে নাম রয়েছে সাসপেন্ডেড ২ অফিসারের। দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড ২ সিবিআই অফিসার ও ২ কনস্টেবল। 

লালন মৃত্যুর ঘটনা এক নজরে 
২১ মার্চ রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধান ভাদু শেখকে গুলি-বোমা মেরে খুন করা হয়। ৩ ডিসেম্বর বগটুই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত লালন শেখকে গ্রেফতার করে CBI ।


গত ১২ ডিসেম্বর, রামপুরহাটের অস্থায়ী CBI ক্যাম্পে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়, বগটুই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের। CBI দাবি করে, লালন আত্মঘাতী হয়েছেন। কিন্তু লালনের স্ত্রী অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামীকে পিটিয়ে মারা হয়েছে! এই মর্মে CBI-এর ৭ আধিকারিকের বিরুদ্ধে রামপুরহাট থানায় এফআইআর করেন তিনি। 


লালন শেখের মৃত্য়ুর ঘটনায়, আগেই জনস্বার্থ মামলা ও বিচারবিভাগীয় তদন্তের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল হাইকোর্ট। DIG, CID-র নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। এর তদন্তে বগটুইয়ে যান সিআইডির ডিআইজি। কথা বলেন লালনের স্ত্রীর সঙ্গে। যান সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্য়াম্পেও। 


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর,  লালন শেখের মৃত্যু রহস্যের তদন্তে বগটুইয়ে গ্রামে যান সিআইডি-র ডিআইজি সোমা দাস মিত্র। তাঁর সামনে  সিবিআই-এর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মৃত লালনের স্ত্রী রেশমা। তাঁর দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর স্বামীর হাতে হাতকড়া পরানো হয়নি, যাতে পালাতে গেলে গুলি করা যায়। 


গত ১২ ডিসেম্বর, মৃত্যুর আগে, লালন শেখকে নিয়ে বগটুইয়ে তাঁর শ্বশুরবাড়ি-তে নিয়ে যায় সিবিআই। সেই দিন ঠিক কী ঘটেছিল, সিবিআই অফিসারদের ভূমিকা কী ছিল, সেই সমস্ত বিষয়ে লালনের স্ত্রীর কাছে জানতে চান সিআইডি-র ডিআইজি। সূত্রের খবর তাতে লালনের স্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, "(জায়গা দেখিয়ে) আমার স্বামীকে এখানে দাঁড় করিয়ে রেখে মারধর করেছে। আমি দেখে ছুটে এলাম এখানে। বিলাসবাবু এখানে দাঁড়িয়ে আছেন। ওঁর পায়ে আমি পড়ে গেলাম। ওকে মারবেন না। স্যর আমরা কিচ্ছু জানিনা। বাড়িতে চুরি হয়ে গিয়েছে । কিচ্ছু জানি না এই সব বিষয়ে।"