ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, সিউড়ি : ২০২৩-'২৪ সালের বাজেটে দেউচা পাঁচামিতে (Deucha Pachami Coal Block) কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু, প্রায় দেড় বছর আগে জমি দেওয়া হলেও, এখনও চাকরি মেলেনি। এই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় জেলাশাসকের দফতরে ধর্নায় বসেন দেউচা পাঁচামি কয়লা খনি এলাকার জমিদাতাদের একাংশ।


আন্দোলনকারীদের দাবি, প্রায় ৬১৩ জন জমিদাতা রয়েছেন। প্রায় দেড় বছর আগে জমি দিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁরা এখনও চাকরি পাননি। অথচ তাঁদের ক্রমিক নম্বর পেরিয়ে অনেকে চাকরিতে যোগদান করেছেন। চাকরির জন্য তাঁরা বারবার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন৷ কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং মিলছে তারিখের পর তারিখ ৷ বাধ্য হয়ে গতকাল তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন।


তাঁদের দাবি, চাকরি দিতে না পারলে প্রশাসন সেটা বলুক। পাঁচামির কয়লা প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া হবে। যদিও এপ্রসঙ্গে জেলাশাসক বিধান রায় বলছেন, মন্ত্রিসভায় বিষয়টি পাঠানো আছে। ওখানে অনুমোদন হলেই বাকিরা চাকরি পেয়ে যাবেন।


টাটাদের সিঙ্গুর ত্যাগের পর বাংলায় শিল্পক্ষেত্রের ক্ষতি নিয়ে এখনও আক্ষেপ শোনা যায় কান পাতলে। এরই মধ্যে দেউচা পাঁচামি (Deucha pachami) নিয়ে গত বছর বড় ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ক্যাবিনেট বৈঠকের পর মমতা বলেন, তৎকালীন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের সঙ্গে দেউচা পাঁচামির জমি নেওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। জোর করে কোনও জমি নেওয়া হচ্ছে না। যারা সানন্দে জমি দিতে চাইবেন সেই জমি নেওয়া হবে। জোর জবরদস্তি করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না।  


তিনি আরও বলেছিলেন, 'দেউচা পাঁচামি হলে লক্ষাধিক ছেলেমেয়ের চাকরি হবে। সরকার অনেক টাকা খরচ করবে। আমরা দেউচা পাঁচামিতে কাউকে বঞ্চিত করছি না। জমির বদলে জমি, বাড়ির বদলে বাড়ি দেওয়া হচ্ছে। বাড়ি করতে ৫ লক্ষ টাকা প্যাকেজ দেওয়া হবে। বাড়ি করার জন্য দেওয়া হচ্ছে ৭ লক্ষের আর্থিক প্যাকেজ। দেউচা পাঁচামিতে প্রতি পরিবার থেকে দেওয়া হবে চাকরি। রাজ্য এখানে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। দেউচা পাঁচামি হলে ১০০ বছর কোনও বিদ্যুত্‍ সঙ্কট হবে না। চাকরি-বাড়ি-জমি সব কিছুই দেওয়া হবে। আমি চাই দেউচা-পাঁচামিতে স্থানীয় ছেলেমেয়েদের চাকরি হোক। কেউ কেউ ওখানে গিয়ে মিথ্যা প্রচার করছেন। এটা বাংলার নিজস্ব শিল্প, ১ লক্ষের চাকরি হবে।’