ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: বগটুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের ( Lalan Sheikh ) মৃত্যুর তদন্তে দ্বিতীয়বার বগটুই গ্রামে গেল CID। এদিন লালনের শ্বশুরবাড়িতে যায় CID-র ৫ সদস্যের টিম। লালনের স্ত্রী-সহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলবেন তদন্তকারীরা। ঘটনার দিন লালনকে গ্রামে আনা হয়েছিল। সেদিন কী কী ঘটেছিল, তা জানতে চান CID-র তদন্তকারীরা। জিজ্ঞাসাবাদ-পর্ব ভিডিওগ্রাফি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।


বগটুইকাণ্ডে লালন শেখের তদন্তে CID-এর নজরে এবার রামপুরহাটে CBI-এর অস্থায়ী ক্যাম্পের ইন্টারোগেশন রুম।  দ্বিতীয়বার তদন্তে ফরেন্সিক দল। শাওয়ার পাইপ থেকে শৌচাগারের উচ্চতা, লালনের ওজন ও উচ্চতা, সবটাই পরীক্ষা করে দেখা হবে। এই উচ্চতায় আত্মহত্যা সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। লালনের দেহের ভার বহনের ক্ষমতা শাওয়ার পাইপের ছিল কিনা, তা জানতে সম ওজনের সামগ্রী দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। উল্লেখ্য, হেফাজতে লালনের রহস্যমৃত্যু, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এবার তদন্তে নেমেছে সিআইডি। স্বামীর রহস্যমৃত্যুতে সিআইডি তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন লালনের স্ত্রী। রামপুরহাট থানা থেকে কাল কেস ডায়েরি নেবে সিআইডি।  বগটুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের সিবিআই হেফাজতে মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই থমথমে বগটুই গ্রাম।  অশান্তির আশঙ্কায় আগে থেকেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বগটুইকাণ্ডে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাঁদের বাড়ির সামনেও সক্রিয় পুলিশি প্রহরা রয়েছে। রামপুরহাট হাসপাতালে হয় লালনের দেহের ময়নাতদন্ত।  হাসপাতালে যায় সিবিআই ও সিআরপিএফ-এর টিম। লালন শেখ গ্রেফতার হওয়ার আগেই তার বাড়ি আগেই সিল করে দিয়েছিল সিবিআই। গতকাল সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় বগটুুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের ঝুলন্ত দেহ। সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়, লালন আত্মঘাতী হয়েছে। অন্যদিকে, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে লালনকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ করেছে তার পরিবার। কিন্তু সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন কীভাবে মৃত্য়ু? উঠছে প্রশ্ন!


 সিবিআই হেফাজতে বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্তের মৃত্যু ঘিরে তুলকালাম। রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প ঘিরে লালন-ঘনিষ্ঠদের বিক্ষোভ। সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে বিক্ষোভ, জাতীয় সড়ক অবরোধ। সিবিআইয়ের হেফাজতে খুনের অভিযোগে লালন-ঘনিষ্ঠদের বিক্ষোভ। সিবিআইয়ের একাধিক আধিকারিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা। খুন ছাড়াও তোলাবাজি, হুমকি-সহ একাধিক ধারায় লালনের স্ত্রীর মামলা। সিবিআইয়ের একাধিক আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের। খুন নয়, আত্মহত্যা, পুলিশের কাছে দাবি সিবিআইয়ের, খবর সূত্রের।  'হেফাজতে লালনের মৃত্যু নিয়ে উত্তর দিতে হবে সিবিআইকে'। সিবিআইয়ের এত স্মার্ট হলে কীভাবে ঘটল এধরনের ঘটনা ? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee)। 


আরও পড়ুন, 'ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন, কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নেবেন না', রানাঘাটের সভায় আর্জি অভিষেকের


তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না, রহস্যমৃত্যুর তদন্ত হবে না ? বিরোধীরা চায় কী, যে তদন্ত হবে না ? ওরা যখন কোনও ইস্যু নিয়ে হইচই করবে, তখন সিবিআই, ইন্টারপোল, মঙ্গলগ্রহ সব এজেন্সি আসবে। আমরা তো পরিষ্কার বলছি, সিবিআই-র বহু যোগ্য ভাল অফিসার আছেন, কিন্তু সিবিআই-কে মিসইউজ করছে বিজেপি। যদি শুভেন্দু অধিকারী চিৎকরে করে বলেন, অমুকের বাড়ি সিবিআই যাবে, সিবিআই অমুককে ধরে আনবে। তাতে তো মানুষের ধারণা হবে সিবিআই-কে চালাচ্ছে বিজেপির এই দলবদলুর চোর চিটিংবাজ ! ফলে সিবিআই অফিসারদের যে ক্রেডিবিলিটি , সেটাকে তো আমরা সম্মান করি, সেটাকে তো ধুলোয় লুটিয়ে দিচ্ছে বিজেপি !