ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: দেশের সুখ শান্তির জন্য পায়ে হেঁটে ভারতবর্ষের ৫১টি সতীপীঠে যাত্রা শুরু করেছেন মধ্যপ্রদেশের ভোপালের বাসিন্দা দুর্গা প্রসাদ লৌয়েশী । চলতি বছরের ২১ শে মার্চ বাড়ি থেকে তিনি পদযাত্রা শুরু করেন তিনি। গুজরাত, রাজস্থান, দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, নেপাল, বিহারে বাবা বৈদ্যনাথ ধাম হয়ে শনিবার সকালে তারাপীঠে এসে পৌঁছান তিনি।


দুর্গাপ্রসাদ লৌয়েশী জানান তিনি চলতি বছরের ২১ মার্চ ২০২৩ সালে তার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেন। এখনও পর্যন্ত তিনি গুজরাত ,রাজস্থান, মথুরা, দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, অমরনাথ, লাদাখ, হিমাচলপ্রদেশ, নেপাল, বিহার, অযোধ্যা, বাবাধাম, এরকম মোট  ২৫ টি জায়গা দর্শন করে এসেছেন। তিনি আরও জানান প্রত্যেকদিন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পথ অতিক্রম করছেন তিনি।


পায়ে হাঁটতে হাঁটতে আজকে তিনি এসে পৌঁছন বীরভূম জেলার রামপুরহাট শহরে। এখান থেকেই তিনি হেঁটে পৌঁছাবেন তারাপীঠ সিদ্ধপীঠে।  সারাদিন কী খাওয়া দাওয়া করেন, কোথায়  বিশ্রাম নেন, এই বিষয়ে তিনি জানান, সারাদিন তিনি তেমন কোনও খাবার খান না। চা-বিস্কুট খেয়েই তার দিন কেটে যায় এবং রাত্রিবেলায় যাওয়ার পথে যে কোনও মন্দিরে তিনি আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং সেই মন্দিরে রাত্রিতে কারও কাছে খাবার চেয়ে খেয়ে নেন। ৫১ টি সতীপীঠ দর্শনে এখনও প্রায় ছয় থেকে সাত মাস সময় লাগবে বলে জানান তিনি। 


সতীপীঠের মাহাত্ম্য কী 

দক্ষের যজ্ঞানুষ্ঠানে যাবার জন্য শিবের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন সতী। শিব বলেছিলেন, বিনা আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে যাওয়া ঠিক হবে না। কারণ, তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে সতী মহাদেবকে বিয়ে করায় ক্ষুব্ধ ছিলেন দক্ষ। আর সেজন্য মহাদেব ও সতী ছাড়া প্রায় সকল দেব-দেবীকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন তিনি। মহাদেবের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সতী উপস্থিত হন। তবে আমন্ত্রিত অতিথি না হওয়ায় যথাযোগ্য সম্মান পাননি সতী। মহাদেবকেও অপমান করেন দক্ষ। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে যোগবলে আত্মাহুতি দেন সতী। ক্রোধে, শোকে জ্বলে ওঠেন শিব।  শেষমেষ বিষ্ণুর বুদ্ধিতে রক্ষা পায় জগত। সুদর্শন চক্রে সতীর দেহকে একান্ন টুকরো করেন নারায়ণ। যে সব জায়গায় সেই দেহখণ্ডগুলি পড়েছিল, সেগুলিই হল এক-একটি পীঠ। তার মধ্যে একটি পিঠ কালীঘাটও। কলকাতার কালীপীঠ কালীঘাটে সতীর ডান পায়ের আঙ্গুল পড়েছিল বলে কথিত।