ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: এবার সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির (Corruption) অভিযোগ তুলে সরব হলেন তৃণমূল নেতা ও এলাকা বাসীদের একাংশ ।সোমবার সন্ধ্যায় শাসক দলের নেতা কর্মীরা বিক্ষোভ দেখায় বীরভূমের (Birbhum) মুরারই থানার রাজগ্রাম ডিসিআর ক্যাম্পে। রাজগ্রাম পাথর শিল্পাঞ্চল থেকে যে সব গাড়িতে পাথর আসে সেই গাড়ি গুলি থেকে ভূমি দফতরের কর্মীরা রয়্যালটি বাবদ কুপনের মাধ্যমে টাকা নেয়। তার জন্য রাজগ্রামে একটি ক্যাম্পও রয়েছে।
তৃণমূলের নেতা কর্মীদের অভিযোগ, পাথরের ওজনের উপর সরকারি নির্ধারিত মূল্যে চেয়ে কম মাল দেখিয়ে বেআইনি ভাবে বেশি টাকা নিয়ে পাথর ভর্তি লরি পাশ করানো হচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যে নামলেই ভূমি দফতরের সরকারি কর্মীদের দুর্নীতি বেড়ে যায় বলে অভিযোগ। কম রয়্যালটির জন্য দিনের বেলা পাথরের গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এর ফলে সার দিয়ে দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। এর জেরে ভোগান্তির শিকার হন সাধারন মানুষ ।সন্ধ্যা নামতেই এক এক করে পাথরে গাড়ি বেশি পাথর নিয়ে সরকারি মূল্যে কম পাথর দেখিয়ে তার রয়ালটির সঙ্গে কিছু বাড়তি টাকা দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর সেই বাড়তি টাকা ঢুকছে সরকারি কর্মীদের পকেটে । বিষয়টি নজরে আসতেই পাথর অ্যাসোসিয়েশন ও স্থানীয়দের একাংশ সেই সরকারি ডি সি আর ক্যাম্পের সামনে বিক্ষোভ দেখায় ।সেখানে নেতৃত্ব দেয় বীরভূম জেলা পরিষদের কর্মধক্ষ্য আসগার আলী ।তিনি অভিযোগ করেন, এই ক্যাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আমরা ১৫ লক্ষ টাকা দিতে চাইলেও আমাদের দেওয়া হয়নি। কিন্তু সরকারি কর্মচারীরা চার লক্ষ্য টাকা দিয়ে বাকি টাকা চুরি করছে।যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্যাম্পে থাকা ভূমি দফতরের কর্মীরা।
আরও পড়ুন,'সুকান্তবাবু কি গোয়েন্দা ?' সুবীরেশ গ্রেফতারে 'নথি' জ্বালানোর ইস্যুতে বিস্ফোরক শান্তনু সেন
প্রসঙ্গত, রাজ্যে ইতিমধ্যেই একাধিক মামলায় নাম জড়িয়েছে শাসকদলের হেভিওয়েটদের। তাই বাইশটা সুন্দর শুরু হলেও গ্রাফ আর তীর্যক যায়নি তৃণমূলের। কারণ ততক্ষণে ময়দানে বিরোধীদের পাশাপাশি ববিতা সরকার। চলতি বছরে শাসকদলের একাধিক হেভিওয়েটের রাত ঘুম কেড়েছে, অন্যতম সেই মামলা, নিয়োগ দুর্নীতি। এছাড়াও আছে আরও একাধিক দুর্নীতির মামলা। তবে ইস্যুটা হল, বগটুই থেকে শুরু করে একাধিক মামলায় রাজ্যের তরফে সিট গঠন করা হলেও তা সুদুরপ্রসারি হয়নি।হাইকোর্টের নির্দেশে একের পর এক মামলায় সিট-কে সরিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (ED, CBI) হাতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর তারপরেই গ্রেফতার হয়েছেন, শাসকদলের পার্থ-অনুব্রত -সহ একাধিক। এহেন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-সিবিআইয়ের অতি সক্রিয়তা নিয়ে বিধানসভায় সরকারি প্রস্তাব পেশ করেছে রাজ্য সরকার। তবে এযাবৎকালে এতদিন অবধি, রাজ্যের একাধিক মামলায় শাসকদলের হেভিওয়েটদের নাম জড়ানোর পর, সরব হয় বাম-বিজেপি। তবে এবার মমতার সরকার থাকাকালীন সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হলেন খোদ শাসকদলের নেতারাই।