প্রকাশ সিনহা, রামপুরহাট, বীরভূম: বগটুইয়ের তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখের খুনের ঘটনায় এবার এফআইআর দায়ের করল সিবিআই।
কোন আইনে মামলা?
সূত্রের খবর, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ খুন, ১২০ বি-এ ষড়যন্ত্র, ৩৪ ধারায় সংগঠিত অপরাধ এবং বিস্ফোরক আইনের ৩ ও ৪ নম্বর ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের তালিকায় নাম রয়েছে পলাশ শেখ, সোনা শেখ, সঞ্জু শেখ, ছোট লালন, মাসাদ শেখ-সহ ১০ জনের। খবর সিবিআই সূত্রে।
আদালত জানিয়েছে:
শুক্রবারই সিবিআই-এর হাতে ভাদু শেখ খুনের তদন্তভার তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছিল, রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি এবার তৃণমূল উপ প্রধান ভাদু শেখের খুনেরও তদন্ত করবে সিবিআই। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, ভাদু শেখের খুন ও বগটুই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। ভাদু শেখ খুনের তদন্তভার হাতে নিতে আপত্তি নেই বলে এর আগে জানিয়েছিল সিবিআই। আদালত জানিয়েছে, বগটুইয়ের হত্যাকাণ্ড এবং ভাদু খুন—একত্রে দুই ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বার করতে হবে তাদের। তাদের খুঁজে বার করে নিরপেক্ষতা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্ত সারতে হবে। শুরু থেকে মামলাকারীরা জানিয়ে আসছিলেন যে, দুই ঘটনার মধ্য যোগসূত্র ছিন্ন করতে তথ্য-প্রমাণ নষ্ট করা গতে পারে। এ ব্যাপারে রাজ্য পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
হিংসার বলি:
গত ২১ মার্চ রাতে রাস্তার ধারের দোকানে চা খেতে গিয়ে খুন হন ভাদু। তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে একদল দুষ্কৃতী। তাতেই মারা যান তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু। এরপরই বগটুইয়ে পর পর বেশ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা সামনে আসে। তাতে শিশু-সহ আট জনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে মারা যান একজন। ভাদু খুনের প্রতিশোধ নিতেই বগটুইয়ে এই নৃশংস হামলার করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনাতেও মামলার পর, তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ভাদুর উত্থান:
নিহত তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখের রাজনৈতিক উত্থান ছিল নজরকাড়া। ভাদুকে প্রথমে লোকে চিনত থানার গাড়িচালক হিসেবে। সেখান থেকে থানার ডাক মাস্টার হন ভাদু। ৫ বছর আগে ভাদুকে উপপ্রধান করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভাদু শেখ খুনে অভিযুক্ত সোনা শেখ, পলাশ শেখ, নিউটন শেখরা একসময় তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এদের বিরুদ্ধেই গত জানুয়ারি মাসে ভাদুর দাদা বাবর শেখকে খুনের অভিযোগ ওঠে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, বালি খাদান নিয়ে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছিল। তার জেরেই খুন হন ভাদু শেখ এবং তারপরে প্রতিহিংসা নিতে আগুন লাগানোর অভিযোগ ওঠে।