মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, বীরভূম: শান্তিনিকেতনে (Shantiniketan) ৩টি বাড়ি ও গেস্ট হাউস ইডির নজরে। গোয়ালপাড়া (Goalpara), ফুলডাঙা (Phooldanga) ও উত্তরপল্লিতে (Uttarpalli) এই বাড়ি ও গেস্ট হাউস রয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, তাঁরা মাঝে মধ্যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) আসতে দেখেছেন।
অপা, ইচ্ছে, তিতলি ও লাবণ্য। শান্তিনিকেতনের কাছে এই ৩টি বাড়ি ও গেস্টহাউস কার? এই সম্পত্তির সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)-অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) কোনও যোগসূত্র আছে? তা নিয়েই জল্পনার স্রোত বইছে।
৩টি বাড়ি ঘিরে এখন জল্পনার পাহাড়: শান্তিনিকেতনের শান্ত পরিবেশে ১টি গেস্ট হাউস আর ৩টি বাড়ি ঘিরেই এখন জল্পনার পাহাড়। কার বাড়ি? কার গেস্টহাউস? বাড়ি-গেস্ট হাইসগুলির সঙ্গে কি যোগসূত্র আছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়-অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের? তার খোঁজেই আমরা হাজির হয়েছিলাম শান্তিনিকেতনের অদূরে প্রান্তিকে বাড়ির নাম - অপা। একতলা বাংলো বাড়ি। সামনে-পিছনে বাগান। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, নিয়মিত পরিচর্যা হয়। পিছনে কেয়ারটেকার হাউস। সেখানে দেখা মিলল দাস দম্পতির।
‘অপা’র কেয়ারটেকার ঝর্ণা দাসের কথায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি বলছে সবাই, আমরা কাজ করি, টাকা দেয়, কে টাকা দেয়? এক মহিলা আসতেন, ৫-৬ মাস পরপর, তিনিই টাকা দেন। কে এই মহিলা? অর্পিতা? যদিও ছবি দেখে কিছুই স্পষ্ট বলতে পারেননি ওই মহিলা। জানিয়েছেন, 'এই ছবিটা বুঝতে পারছি না, এরকমই দেখতে'
কেয়ারটেকরের চাঞ্চল্যকর দাবি: অপার উল্টোদিকেই অন্য একটি গেস্ট হাউস। সেখানে কর্মরত রেখা সিংহ অবশ্য চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন। গেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার রেখা সিংহের কথায়, ৬ বছর ধরে এখানে থাকি, এটা পার্থ চ্যাটার্জির বাড়ি। তাঁকে প্রশ্ন করা হয় পার্থ চ্যাটার্জি আসেন? উত্তর দেন হ্যাঁ রাতে আসেন, অনেক লোকজন আসত সঙ্গে, গাড়ি থাকত, অর্পিতা আসতেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ওরা বেশিক্ষণ থাকতেন না, আরও অনেক বাড়ি আছে ওনাদের, তবে এলে বাইরে বেরোতেন না, কিছুক্ষণ থাকতেন, তারপর চলে যেতেন। বাইরে খুব বেশি কারও সঙ্গে কথা বলতে দেখিনি। অর্পিতাকে একবারই আসতে দেখেছিলেন বলে দাবি ওই কেয়ারটেকরের।
প্রান্তিকের ফুলডাঙা থেকে বেশ কিছুটা গেলে উত্তরপল্লি। ‘ইচ্ছে’র পাশের গেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের কথায়, গাড়ি নিয়ে মন্ত্রী আসতেন শুনেছি, নিজের চোখে দেখিনি, এলাকার লোকের কাছ থেকে শুনেছি, মাঝে মধ্যে আসতেন, আমার একবারও দেখার সুযোগ হয়নি।
প্রান্তিকের উত্তরপল্লি থেকে কিছুদূর গেলেই গোয়ালপাড়া এলাকা। এখানেই তিতলি আর লাবণ্যের সঙ্গে দেখা। দু’টো পাশাপাশি বাড়ি। এই বাড়ির মালিকানা ঘিরেও জল্পনার স্রোত বইছে।
এক স্থানীয় বাসিন্দা জানাচ্ছেন, এটা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি বলেই জানি, মাঝে মধ্যে আসতেন, এই দু’টোতেই আসেন বলে জানি, রাতেও থাকতে দেখেছি, বডিগার্ডকেও দেখেছি।বোলপুর গোয়ালপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা ডলি বাঙ্কার কথায়, আমরাও দেখতাম, গাড়ি দেখেছি, এলাকার লোকজন বলে শুনেছি, ওই অর্পিতাকে চিনি না, নিজের চোখে দেখিনি, ৩-৪ মাস আগে শেষবার এসেছিল, জানি, মন্ত্রী কখনও কখনও আসতেন, ২-৪ মাস পরে, বাইরে নিরাপত্তারক্ষীদের দেখতাম, ভিতরে থাকতেন মন্ত্রী। সব মিলিয়ে সম্পত্তির তালিকা ঘিরে জল্পনা জোরাল।