নান্টু পাল, বীরভূম: টাকা দিলেই চাকরি মিলবে প্রাথমিক স্কুলে। এই আশ্বাসে দিয়েছিলেন লক্ষাধিক টাকা। কিন্তু তারপরেও মেলেনি চাকরি। প্রাথমিক স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে এমনই প্রতারণার অভিযোগে নাম জড়াল তৃণমূলের (TMC) গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের। ঘটনাস্থল বীরভূমের (Birbhum) নলহাটির ২ নম্বর ব্লকের নোয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তারাপীঠের (Tarapith) এক বাসিন্দা। গোটা অভিযোগই অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধান। 


এখন চাকরিতে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে সরগরম রাজ্য। প্রাথমিকের টেট, শিক্ষক নিয়োগ থেকে দমকল বা কলেজ সার্ভিস কমিশন, একাধিক জায়গায় নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আদালতের নির্দেশে চলছে সিবিআই তদন্তও। এই পরিস্থিতিতে বীরভূমে উঠল প্রাথমিক স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগ। 


কী অভিযোগ:
তারাপীঠের বাসিন্দা গোলকবিহারী দাসের দাবি, প্রাইমারি স্কুলে (Primary School Job) ছেলের চাকরির জন্য, নলহাটির নোয়াপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান ইমদাদুল হককে, ২০১৪ সালে ৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু ছেলে চাকরি পায়নি। তারপর বারবার বলা সত্ত্বেও সেই টাকা ফেরত দেননি ওই তৃণমূল নেতা। রামপুরহাটের মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। 
তারাপীঠের বাসিন্দা এবং অভিযোগকারী চাকরিপ্রার্থী কৌশিক দাস বলেন, 'উনি আশ্বাস দিয়েছিলেন চাকরি না পেলে টাকা ফেরত দেবেন, সেই টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাত দিচ্ছেন। এখন আমার বাবা ক্যান্সার আক্রান্ত। টাকাটা না পেলে বাবা বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেন। এরজন্য  আমি প্রশাসনের কাছে দ্বারস্থ হয়েছি।'


অভিযোগ অস্বীকার:
পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। নলহাটির নোয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান  ইমদাদুল হক বলেন, 'যে অভিযোগ করেছে সেই অভিযোগকারীকে আমি চিনি না, জানি না। আদৌও সে আমাকে টাকা দিয়েছে কিনা না সে নিজেও জানে না। অচেনা লোককে কেউ টাকা দেবে না। আমার মান সম্মান ক্ষুণ্ণ করার জন্য এটা করেছে।' দলীয়ভাবে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল। বীরভূম তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা দলীয় তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত করে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।'


সরব বিজেপি:
এই ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি (BJP)। দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, 'তৃণমূল নেতারা চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছে, আগামী দিনে আরও সামনে আসবে। বাংলার প্রতিটি জায়গায় তৃণমূল কাটমানি খেয়েছে। তৃণমূল মানে অতিরিক্ত টাকা খাওয়ার যন্ত্র। এই তৃণমূল বিদায় না হলে পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়।'


আরও পড়ুন: বাঁধ ভেঙে বিপত্তি সাগরে, মন্ত্রীকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ