ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও এরশাদ আলম, দুবরাজপুর : আবাস যোজনায় দুর্নীতি হয়েছে। গরিব মানুষকে না দিয়ে যাঁরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তাঁদের বাড়ি দেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তালিকা রয়েছে দুই রকমের। কোনও বিরোধী নেতা নন, এই অভিযোগ তুলে পুরপ্রধানকে চিঠি দিলেন খোদ তৃণমূলেরই কাউন্সিলর। যা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে বীরভূমের দুবরাজপুর পুরসভায়। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পুরপ্রধান।


ওয়ার্ড এক, কিন্তু আবাস-তালিকা দু'টি। এক তালিকায় নাম আছে ৭২ জনের, আর এক তালিকায় নামের সংখ্যা ৭৮। গরিব নয়, আর্থিকভাবে স্বচ্ছলদের বাড়ি দেওয়া হয়েছে। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে তৃণমূলের দখলে থাকা পুরসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি লিখলেন তৃণমূলেরই কাউন্সিলর। শোরগোল পড়ে গেছে বীরভূমের দুবরাজপুর পুরসভায়।


দুবরাজপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের শাসকদলের কাউন্সিলর মানিক মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তাঁর ওয়ার্ডে সরকারি আবাস প্রাপকের তালিকা দু'রকম। কাউন্সিলরের দাবি, কিছু দিন আগে বোর্ড মিটিংয়ে পুরসভা থেকে তাঁকে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তাঁর ওয়ার্ডের ৭২ জনের নাম রয়েছে। কিন্তু পুরসভার ওভারসিয়ারের কাছে থাকা আবাস প্রাপকদের তালিকায় ৭৮ জনের নাম রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, যে ছ’জনের নাম পুরসভার তালিকায় ঢোকানো হয়েছে তাঁদের মধ্যে দু-এক জন বাদ দিয়ে সকলেই বিত্তবান। 


মানিক মুখোপাধ্যায় বলেন, "জনপ্রতিনিধিকে এভাবে হেনস্থা করা অসম্মানের। যে ছ’জনের নাম পুরসভার তালিকায় অতিরিক্ত ঢোকানো হয়েছে তাঁদের মধ্যে দু-এক জন বাদ দিয়ে সকলেই যথেষ্ট পয়সাওয়ালা। সেটা ঢাকতেই কি এই পদক্ষেপ, সন্দেহ হয়। আশা করি, পুরপ্রধান বিষয়টি দেখবেন।" যদিও পুরপ্রধানের দাবি, সরকার অনুমোদিত তালিকা-ই কাউন্সিলরদের দেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় কাউকে নতুন করে যুক্ত বা বাদ দেওয়া যায় না। এটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।


ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা বলেন, বিজেপি এর আগে একাধিকবার অভিযোগ করেছে, অবাসন প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এবার তৃণমূল কাউন্সিলরও সেই অভিযোগ করছেন।


বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলছেন, তালিকা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে। যাঁদের নাম আছে তাঁরা সত্যি বাড়ি পাওয়ার যোগ্য কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।


কিন্তু সরকার অনুমোদিত তালিকা কাউন্সিলরদের দেওয়া হলে, সেই তালিকা ২ রকম হল কী করে ? কী করে সেই তালিকায় নামের সংখ্যার ফারাক হল ? প্রশ্ন এলাকার বাসিন্দাদের।