আবির ইসলাম, বীরভূম: পঞ্চায়েত এলাকা থেকে গ্রাম উন্নীত হয়েছে পুর এলাকায়। কিন্তু বিভাগীয় জটিলতায় আটকে গিয়েছে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির তৈরি কাজ। এমনই অভিযোগ বীরভূমের বনেরপুকুর ডাঙা গ্রামের একাধিক আদিবাসী পরিবারের। মানতে নারাজ পঞ্চায়েত। দায় নিতে নারাজ পুরসভা।
ভিতের ওপর কোনওমতে ইটের দেওয়ালটুকু উঠেছে। তার পর আর এগোয়নি বাড়ি তৈরির কাজ। এই ছবি বীরভূমের শান্তিনিকেতন থানার বনেরপুকুর ডাঙা গ্রামের। আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রাম এবার পুরভোটের আগে পঞ্চায়েত এলাকা থেকে পুরসভা এলাকায় উন্নীত হয়েছে।
আগে যেটা ছিল তৃণমূল পরিচালিত রূপপুর গ্রামপঞ্চায়েতের আওতায়, এখন সেটাই হয়েছে তৃণমূল পরিচালিত বোলপুর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। এলাকার এই চারিত্রিক পরিবর্তনের জেরেই নাকি আশ্রয়সঙ্কটে পড়েছে বনেরপুকুর ডাঙা গ্রামের একাধিক পরিবার!
আদিবাসী বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের মাধ্যমে আবাস যোজনা প্রকল্পে তাঁদের বাড়ির জন্য টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু গ্রাম পুরএলাকায় বদলে যেতেই পঞ্চায়েত বাড়ি তৈরির জন্য আর বাকি টাকা দিতে চাইছে না। আবার পঞ্চায়েতের প্রকল্পে বরাদ্দ করবে না জানিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছে পুরসভাও। তার জেরে অসমাপ্ত হয়ে পড়ে রয়েছে আবাস যোজনার কয়েকটি বাড়ি।
বনেরপুকুর ডাঙা গ্রামের বাসিন্দা সোম সোরেনের দাবি, সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পেয়েছি। কিন্তু বাড়ি কমপ্লিট করতে পারছি না। পঞ্চায়েত বলছে পুরসভা জানে। পুরসভা বলছে পঞ্চায়েত জানে। বনেরপুকুর ডাঙা গ্রামের আরও এর বাসিন্দা ছিতে কিস্কু বলছেন, বাড়ির জন্য ৭০ হাজার টাকা পেয়েছি। বাকিটা পাচ্ছি না। তাই করতে পারছি না।
যদিও তৃণমূল পরিচালিত গ্রামপঞ্চায়েতের দাবি, বাড়ি তৈরির জন্য সব টাকাই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। রূপপুর গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান নরেন্দ্রনাথ সরকারের কথায়, গ্রামবাসীদের বুঝতে ভুল হচ্ছে। যে সব বাড়ির কথা বলছে সেই সব বাড়ির টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বোলপুর পুরকর্তৃপক্ষের সাফাই, পঞ্চায়েতের কাজের দায় তারা নেবে না। বোলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পর্ণা ঘোষের দাবি, দু'বছর আগে যে কাজ হয়েছে তার দায় পুরসভা নেবে না। সেই সমস্ত কাজ পঞ্চায়েত দেখবে । নতুন কোনও যদি প্রকল্প আছে সেগুলো নিয়ে আমরা নিশ্চয়ই চিন্তাভাবনা করব ওই এলাকার জন্য।
প্রশাসনের সাফাই বুঝতে কোথাও ভুল হচ্ছে গ্রামবাসীদের। বোলপুর-শ্রীনিকেতনের বিডিও শেখর সাঁই বলছেন, ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বাড়ি। কেউ হয়তো লাস্ট ইনস্টলমেন্ট পাননি। সেটা সমস্যা নয়। মিটিয়ে দেওয়া হবে। সমস্যা হচ্ছে যখনই পুরসভায় গিয়েছে, পুরসভায় এই স্কিমগুলো হচ্ছে বড় টাকার। ৩ লাখ ৬৫ এই রকম। এর ফলে যারা পেয়ে গিয়েছে তারা আর সরকারি সুবিধা পাবে না। তাদের কাছে মনে হচ্ছে ব্যাপারটা সমস্যার। অসমাপ্ত পড়ে থাকা বাড়ির সদস্যরা তাহলে কী করবেন? প্রশ্ন এখন সেটাই।