বীরভূম: বিশ্বভারতীর তিন পড়ুয়াকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে উপাচার্যর বাড়ির সামনে রাতভর বিক্ষোভে সামিল পড়ুয়াদের একাংশ। রাস্তার ওপরে লেখা হয়েছে স্লোগান। গতকাল রাত থেকেই উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ির সামনে প্রতিবাদ অবস্থানে বসেন পড়ুয়াদের একাংশ। বিশ্বভারতীর কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের তর্কাতর্কি হয়। এক কর্মীর বিরুদ্ধে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টার অভিযোগ তুলে শান্তিনিকেতন থানায় নালিশ জানান আন্দোলনরত এক পড়ুয়া। পড়ুয়াদের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সংঘাত ঘিরে শান্তিনিকেতনের পরিবেশ নিয়ে আশঙ্কায় আশ্রমিকরা।
অন্যদিকে বিশ্বভারতীতে পড়ুয়া বিক্ষোভে লেগেছে রাজনীতির রং। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, বিশ্বভারতীকে রাজনীতির আখড়া করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুন্ডামি করার জায়গা নয়। এইসব করে শান্তিনিকেতনের গরিমা নষ্ট করা হচ্ছে। তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
বারবারই বিতর্কের মুখে পড়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। সাসপেন্ডে হওয়া তিন ছাত্রকে ফের তিন বছরের জন্য বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অর্থনীতি বিভাগে বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে ৩ জন ছাত্রছাত্রীকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তাঁদেরকে নোটিশ দিয়ে তিন বছরের জন্য বরখাস্ত করা হল।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে ৩ জন ছাত্রছাত্রীকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিল বিশ্বভারতী। পরবর্তীতে সেই সময়সীমা আরও বাড়িয়ে তিনমাস করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আরও তিন মাস করা হয়। অর্থাৎ মোট ৯ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এবার সেই সাসপেনশন মেয়াদ চলাকালীনই তিন বছরের জন্য বরখাস্ত করা হলো তিন ছাত্রছাত্রীকে।
তিন পড়ুয়া হলেন- রূপা চক্রবর্তী, ফাল্গুনী পান এবং সোমনাথ সৌ। এঁদের নোটিশ পাঠিয়ে বরখাস্তের কথা জানানো হয়েছে। তবে, চিঠিতে তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।২৭ অগস্ট বেলা দেড়টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ভাবে এই আবেদন জানানো যাবে বলে জানান হয়েছে। এই সময়সীমার মধ্যে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করার সাপেক্ষে কোনও আবেদন না করলে তিন বছরের বরখাস্ত থাকার ওই নির্দেশই বহাল থাকবে।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তিন পড়ুয়ার অভিযোগ, উপাচার্য চেয়ারে অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বসার পর থেকেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে রবীন্দ্রনাথের কর্মভূমি সাধের শান্তিনিকেতনে। উপাচার্য আসনের ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই তিন ছাত্র ছাত্রী বিশ্বভারতীর নানান আন্দোলনের মুখ ছিল। আর সেই কারণেই তাঁদেরকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেই সকলের অনুমান।