আবির দত্ত, কলকাতা  : গরুপাচার মামলার ( Cow Smuggling Case ) তদন্তে আদালতে বিস্ফোরক দাবি করল সিবিআই ( CBI )।


গরুপাচারকাণ্ডের তদন্তে নেমে ১১৫টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। যেগুলি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য় পঞ্চায়েতে জমা হওয়া নথি ব্য়বহার করে যেগুলি করোনাকালে ২ দিনে খোলা হয়েছিল। দুদিনে এতগুলি অ্য়াকাউন্ট খোলার নথিতে সই করেছিলেন ব্য়াঙ্ক ম্য়ানেজার ! এই দাবি করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। 


তবে কি গরু পাচারের কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করতেই এই বীরভূমের ব্য়াঙ্কে এই অ্য়াকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল?
উঠছে প্রশ্ন। বৃহস্পতিবারই, বীরভূমে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত প্রধান, কাউন্সিলর-সহ অনুব্রত ঘনিষ্ঠ ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সূত্রের খবর, লটারির মাধ্যমে গরুপাচারের কালো টাকা সাদা করা হয়েছিল কি না, মূলত তাই জানতে চান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। 

আরও পড়ুন :


হাইকোর্টে স্বস্তি শুভেন্দুর, 'অসংবেদনশীল ট্যুইট' নিয়ে শিশু সুরক্ষা কমিশনের শোকজ নোটিসে স্থগিতাদেশ



সেইসমস্ত তথ্য ও বিভিন্ন ব্যাঙ্কে বেনামি অ্যাকাউন্ট এবং গাড়ি ব্যবহার সংক্রান্ত নথি শুক্রবার আদালতে জমা দেয় সিবিআই। এদিন, বিচারক সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান, শেষ ১৪ দিনের তদন্তে কী কী তথ্য উঠে এসেছে? সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, বেনামি ও ভুয়ো অ্য়াকাউন্টের ব্য়াপারে ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

তাঁরা জানিয়েছেন, অ্য়াকাউন্টের লেনদেনের ব্য়াপারে কিছুই জানেন না। ১২ জন টিপসই দিয়েছেন। এছাড়াও সিবিআইয়ের দাবি, ৪ টি অ্য়াকাউন্ট থেকে ভোলে ব্য়োম রাইস মিলের অ্য়াকাউন্টে টাকা গেছে। অনুব্রত ঘনিষ্ঠ রাজীব ভট্টাচার্যের অ্য়াকাউন্টে গেছে ৬৬ লক্ষ টাকা। 

এরপরই এই মামলায় অনুব্রত মণ্ডল ( Anubrata Mondal ) ও তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে ফের জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য় আবেদন জানায় সিবিআই। পাশাপাশি, ইলাবাজারের পশু হাটের দালাল, গরুপাচারকাণ্ডের অন্য়তম অভিযুক্ত 
আব্দুল লতিফকেও পলাতক ঘোষণার আর্জি জানানো হয়। এর প্রেক্ষিতে বিচারপতি জানান, আসানসোল জেলে গিয়ে অনুব্রতকে জিজ্ঞাদাবাদ করতে পারবেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। আর তিহাড় জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে, সায়গল হোসেনকে।

পাশাপাশি, ভুয়ো অ্যাকাউন্ট যাদের নামে খোলা হয়েছে তাদের গোপন জবানবন্দি নিতে সিবিআইকে নির্দেশ দেন বিচারক। এদিন, অনুব্রতর জামিনের আবেদন জানানো হয়নি। তবে ভোলে ব্য়োম রাইস মিলের অ্য়াকাউন্ট ফ্রিজের নির্দেশ যাতে তুলে নেওয়া হয়, সেই আবেদন জানান অনুব্রতর আইনজীবী। ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুব্রত মণ্ডলকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আসানসোল আদালত। বিচারক জানিয়েছেন, ওই দিনই রাইস মিলের অ্য়াকাউন্ট ফ্রিজ তুলে নেওয়ার আবেদনের শুনানি হবে।

এদিন আদালতে হাজির ছিলেন অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের আইনজীবী। তিনি জানান, সায়গল সম্পর্কে সমস্ত তথ্য় ও সোনা-গয়নার হিসেব পেশ করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের পাল্টা দাবি, বিকৃত নথি দেওয়া হয়েছে. যা তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা প্রকৃত নথির সঙ্গে মিলছে না। ১৭ই ফেব্রুয়রি এই মামলারও পরবর্তী শুনানি হবে।