গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম : আজও প্রচীন ঐতিহ্য বজায় রেখে বামাক্ষ্যাপার স্মৃতিবিজড়িত পুজো হয়ে আসছে রামপুরহাট থানার আটলা গ্রামের সরকার বাড়িতে। যতদিন যাচ্ছে এই পুজোর জৌলুস ততই বাড়ছে। আটলা গ্রামের সরকার বাড়ির পুজো আনুমানিক ৩০০ বছরের বেশি।
বোধনের দিন ঘট মণ্ডপে আনার পর থেকেই আটলা গ্রামের সরকার বাড়ির পুজো শুরু হয়। সেই দিন থেকেই প্রতিদিন চলে পুজো এবং চণ্ডীপাঠ। পুজোর প্রতিষ্ঠাতা তৎকালীন আটলা গ্রামের জমিদার ঘনশ্যাম সরকার। তিনি খুব ধার্মিক ছিলেন। এলাকার মানুষকে পুজোর কটা দিন আনন্দে রাখতে তিনি মন্দির বানিয়ে একচালার সাবেকি মৃন্ময়ী প্রতিমা গড়ে পুজোর সূচনা করে। পরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মন্দিরটি ভেঙে পড়ে। কিন্তু পুজো বন্ধ হয়নি। মাটির মন্দির নির্মাণ করে পুজো চলত। কথিত আছে, সরকার পরিবারের বংশধর দুর্গাদাস সরকারের হাত ধরে মাত্র ১৩ বছর বয়সে তারাপীঠ মন্দিরে ফুল তোলার কাজে যোগ দেন বামাক্ষ্যাপা। পরবর্তী সময়ে পুজোর দিনগুলিতে নিজের গুরুদেব কৈলাশপতিকে সঙ্গে নিয়ে সরকার বাড়ির পুজোয় অংশ নিতেন সাধক বামাক্ষ্যাপা।
১৩৬০-৬২ বঙ্গাব্দে সরকার বাড়িতে অর্থাভাব দেখা দেওয়ায় পুজো প্রায় বন্ধ হয়ে আসছিল। সেসময় তাঁরা গ্রামের অহিভূষণ চট্টোপাধ্যায়কে পুজোর দায়িত্ব দিয়ে সপরিবারে ভাগলপুর চলে যান। কিন্তু অহিভূষণের আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় এগিয়ে আসেন গ্রামের কুমারিশচন্দ্র সরকার। তখন থেকেই পুজো চালিয়ে আসছেন চট্টোপাধ্যায় ও সরকার বাড়ির সদস্যরা। তাঁদের বর্তমান বংশধর প্রবীণ কালীকিংকর চট্টোপাধ্যায়, উমাকিঙ্কর চট্টোপাধ্যায় ও বাসুদেব সরকাররা জানান, “এই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা সরকার বাড়ির বর্তমান সদস্যরা এখন আর আসেন না। তবে প্রতিবছরই তাঁরা সাহায্য পাঠান ।
সপ্তমীর দিন পালকিতে করে সাড়ম্বরে মায়ের ঘট ভরে আনা হয়। সন্ধি পুজোয় ছাগ বলি করে রান্না প্রসাদ মাকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয়। দশমীর দিন মাকে বাইচে নাচিয়ে সরকার বাড়ির পুকুরে নিরঞ্জন দেওয়া হয়।