নানুর : বীরভূমের নেতাদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বৈঠকের আগেই লালমাটিতে অশান্তির সুর। অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) নাম না করে তাঁর বিরুদ্ধে এবং জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগ করলেন, নানুরের তৃণমূল বিধায়ক (Nanoor TMC MLA) বিধানচন্দ্র মাঝি (Bidhanchandra Majhi)। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, তিনি বলছেন, "বিগতদিনে যাঁরা ছিলেন, সংগঠন ও ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন।"
অন্যদিকে, ফেসবুক লাইভে বিস্ফোরক তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য় কাজল শেখ। তিনি অভিযোগ করেছেন, কয়েকজন আছেন, যাঁরা দলটাকে লুটেপুটে খাওয়ার জায়গা ধরে নিয়েছিলেন। তাঁদের বীরভূম থেকে সরাব।
রাহুলের খোঁচা-
এনিয়ে শাসক দলকে কার্যত তুলোধনা করলেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। তিনি বলেন, "যখন দেখছেন অনুব্রত মণ্ডল বেকায়দায়, যাঁরা অনুব্রত মণ্ডলের হামলা, হিংসা, দমননীতি, স্বেচ্ছাচারিতার জন্য মুখ খুলতে পারেননি, আজ তাঁরা আস্তে আস্তে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। এ তো সবে শুরু হল। আমি মনে করি, প্রচুর তৃণমূলের কার্যকর্তা, নেতা আছেন, যাঁরা ভয়ে-চাপে কোনও কিছু বলতে পারেননি। কারণ, অনুব্রত মণ্ডলের উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরো আশীর্বাদের হাত ছিল। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য অনুব্রত মণ্ডলের এত বাড়বাড়ন্ত এটা ছোট বাচ্চাও জানে। অনুব্রত এখন তিহাড় জেলে, তাই এরা বুঝতে পারছেন অনুব্রতর দিন শেষ হয়ে আসছে। মুখ খোলার সময় এসেছে। তাই যাঁরা কোণঠাসা ছিলেন, তাঁরা ধীরে ধীরে মুখ খুলতে শুরু করেছেন।"
এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের সোশাল মিডিয়া সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, "যেটা বিধানচন্দ্র মাঝি বলেছেন, সেটা দলের অভ্যন্তরে তাঁর যদি কোনও বক্তব্য থেকে থাকে, সেটা দলে বলার সঠিক জায়গা আছে। আর কাজল শেখ যেটা বলেছেন, দলটাকে লুঠেপুটে খাওয়ার জায়গা করতে দেওয়া যাবে না, এটা তো স্বাভাবিক। এটা তো তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্ব-কর্মী একথা বলেন।"
প্রসঙ্গত, গরুপাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। কেষ্টবিহীন বীরভূমে প্রায়ই হুঁশিয়ারির সুর শোনা যাচ্ছে জেলা-রাজনীতিতে অনুব্রত-বিরোধী বলে পরিচিত, তৃণমূল নেতা কাজল শেখের গলায়। এর আগে নানুরের সিঙ্গি গ্রামে কর্মিসভায় পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট বিলি নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি অনুব্রতর বিরুদ্ধে জেলে বসে দল চালানোর অভিযোগ তুলেও সরব হন তৃণমূলের বীরভূম জেলার কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ। তৃণমূলের একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার বিরুদ্ধে দলেই এ হেন অভিযোগ ওঠায় জেলার রাজনীতিতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়।
আরও পড়ুন ; 'বগটুইগ্রামে বিজেপির কোনও ভোট নেই', কেন বললেন শুভেন্দু ?