ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম :  'বিশ্বভারতী অল্পশিক্ষিত এবং অর্ধশিক্ষিত লোকজনে ভরে গিয়েছে। বসন্ত উৎসবের নামে বসন্ত-তাণ্ডব বন্ধ করে দিয়েছি। বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠান জনতার জন্য নয়।' ফের বিস্ফোরক বিশ্বভারতীর (  Visva Bharti Basanta Utsav )উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (VC ‌‌Bidyut Chakraborty )। উপাচার্যর আরও দাবি, ব্রিটিশদের পদলেহনের জন্য দুর্গাপুজো চালু করা হয়েছিল। উনি সবকিছুতেই খারাপ দেখেন, প্রতিক্রিয়া প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুরের। 

উপাচার্য আরও বলেন, ' প্রথা ভেঙে বসন্ত উৎসব করা হল না। অর্থাৎ যাঁরা প্রথার কথা বলেন, তাঁরা বসন্ত উৎসবের মাধ্য়মে বসন্ত তাণ্ডব চান। আমরা সেই বসন্ত তাণ্ডবের পক্ষপাতী নই। আমাদের পাঠভবনের ছেলেমেয়েরা বসন্ত আবাহন করেছে। আমরা বসন্ত বন্দনা করব।...এটা বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠান। জনতার জন্য় নয়। ' তাঁর মতে, বিশ্বভারতী অশিক্ষিত অল্পশিক্ষিত লোকে ভরে গেছে। অশিক্ষিত লোকেদের আমি দোষ দিই না কারণ তাদের শিক্ষা দেওয়া যায়, তারা শোনে। কিন্তু যারা অল্প শিক্ষিত তারা খুব ক্ষতিকারক। ' 

আরও পড়ুন :


এবারও বিশ্বভারতীতে হচ্ছে না বসন্ত উৎসব, সাধারণকে বাদ দিয়েই পরশু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বসন্ত-বন্দনা




সেই সঙ্গে দুর্গাপুজো নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেন উপাচার্য । বলেন ' দুর্গাপপুজোর ইতিহাস যদি দেখেন, দেখবেন দুর্গাপুজো শুরু হয় কিন্তু ব্রিটিশদের পদলেহন করার জন্য়। ...তৎকালীন যুগে রাজাদের মধ্যে জমিদারদের মধ্য়ে প্রতিযোগিতা হত, কে ইংরেজ সাহেবদের দুর্গামঞ্চে নিয়ে আসবেন। ...অনেক ধরণের পানীয় পান করার সুযোগ ছিল' 


বিতর্কের সূত্রপাত বিশ্বভারতীর বসন্ত-বন্দনা ঘিরে। বসন্ত উৎসবের পরিবর্তে এবার শান্তিনিকেতনে বসন্ত বন্দনার আয়োজন করা হয়েছে। ৭ মার্চ দোল। তবে দোলের দিনের পরিবর্তে বসন্ত বন্দনা হবে ৩ মার্চ। সাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। গতবছরের মতো এবারও শুধুমাত্র বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, অধ্যাপক, কর্মীরাই 
বসন্ত-বন্দনায় যোগ দিতে পারবেন। এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আশ্রমিকদের অভিযোগ, এভাবেই ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি লোপ পাচ্ছে। এই নিয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি মন্তব্য এড়িয়েছেন।   


বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দোল পূর্ণিমায় বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেনি গতবারও। ২০২২ এও বিশ্বভারতীর উদ্যোগে বসন্ত উৎসব উদযাপন হয়নি শান্তিনিকেতনে। বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা নিজেরাই ক্যাম্পাসে নাচে, গানে, আবির খেলায় মেতে ওঠেন। আর সেখান থেকে ওঠে উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্লোগান।