আবির ইসলাম, বীরভূম: কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীর উদ্যোগে এবার বসন্ত উৎসব উদযাপন হল না শান্তিনিকেতনে। বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা নিজেরাই ক্যাম্পাসে নাচে, গানে, আবির খেলায় মেতে উঠলেন। আর সেখান থেকে উঠল উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্লোগান। এবিষয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।


বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দোল পূর্ণিমায় বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেনি এবার। এই আবহে শুক্রবার বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারাই মেতে উঠলেন বসন্ত বন্দনায়। শুক্রবার সকাল ৮টা নাগাদ আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা শান্তিনিকেতনের উপাসনাগৃহের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে শুরু হয় প্রভাত ফেরি। বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে সকাল ৯টা নাগাদ শোভাযাত্রা পৌঁছয় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে। 


সেখানে নাচ, গানের মধ্যে দিয়ে নিজেদের মতো করে বসন্ত উৎসব উদযাপন করেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। গান শেষ হতেই শুরু হয় আবির খেলা। তার মধ্যে থেকেই ওঠে উপাচার্য বিরোধী স্লোগান। সেখানে লেখা, 'বিদ্যুতকে ওএলএক্স-এ বেচে দাও' ইত্যাদি। করোনা-পরিস্থিতিতে, গত দু’বছর শান্তিনিকেতনে ঘরোয়াভাবে হয়েছে বসন্ত উৎসব। এবছর বসন্ত উৎসবের দিন ঠিক না হলেও, দানা বাঁধে বিতর্ক।


ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওয় বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বলতে শোনা যায়  রাজ্য সরকার ও পুলিশ সাহায্য না করায় ঘরোয়াভাবে হবে অনুষ্ঠান। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, "এবার আমরা হোলির দিন বসন্ত উৎসবের আয়োজন করছি না। হোলির দিন উৎসবের আয়োজন করলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। রাজ্য সরকার ও রাজ্য পুলিশ আমাদের সাহায্য করতে চাইছে না। তাই আমরা রাজ্য পুলিশের উপর নির্ভর করব না।" 


বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের দাবি, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বসন্ত উৎসব উদযাপন না করলেও, শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য নিজেদের উদ্যোগে অটুট রাখলেন তাঁরা। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারী পড়ুয়া শুভ নাথ বলেন, "এবছর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ আমাদের ওপর দায় দিয়েছে, বসন্ত উৎসব নাকি আমাদের জন্য হচ্ছে না। করতে পারবে না তারা। আমরা করে দেখিয়ে দিলাম বসন্ত উৎসব। ইচ্ছাশক্তিটাই বড়। আসলে উপাচার্য সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন পৌষমেলা , বসন্ত উৎসব সব বন্ধ করে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য নষ্ট করবেন। আমরা তা নষ্ট হতে দেব না।" 


হস্টেল খোলা সহ ৩ দফা দাবিতে টানা ছাত্র আন্দোলনের মধ্যেই বিশ্বভারতীতে পদত্যাগ করেছেন রেজিস্ট্রার ও ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক। উপাচার্যের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।