সুদীপ চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জে কুলিক নদীর তীরে অবস্থিত কুলিক পক্ষী নিবাস (Bird Sanctuary)। যেটি এশিয়ার (Asia) দ্বিতীয় বৃহত্তম পক্ষীনিবাস হিসেবে পরিচিত। রাজ্যের (West Bengal) বিভিন্ন প্রান্ত, এমনকি ভিন রাজ্য ও বিদেশি পর্যটকেরাও এই পক্ষীনিবাসে আসেন ঘুরতে। এই পক্ষীনিবাসকে ঘিরে রায়গঞ্জে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। যার মানোন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার (West Bengal Govt)।
কিন্তু এরই মধ্যে পক্ষীনিবাসে এসে ধাক্কা খেলেন পর্যটকরা। আচমকাই বাড়ানো হল কুলিক পক্ষী নিবাসের প্রবেশ মূল্য। যেখানে আগে মাথা পিছু টিকিটের মূল্য ছিল ৪০ টাকা। তা এক ধাক্কায় তিন গুণ বাড়িয়ে এখন ১২০ টাকা করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই নতুন প্রবেশ মূল্য ধার্য হয়েছে বলে খবর। যার জেরে কিছুটা হলেও হতাশ পর্যটকের দল।
তারা বলছেন, আগে যা ছিল এখনও পক্ষী নিবাসের ভেতরে একই পরিকাঠামো রয়েছে। বর্তমানে আলাদা কোনো বিশেষ আকর্ষণ নেই। সেক্ষত্রে প্রবেশ মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। রায়গঞ্জের বিশিষ্ট পরিবেশ ও পশুপ্রেমী সংস্থার সম্পাদক গৌতম তান্তিয়া এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন, কোথায় কতটা শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম? রাজ্যের কোথায় দুর্যোগ?
তিনি বলেন, এক ধাক্কায় টিকিট মূল্য বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য পর্যটকদের ভীর ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। কারণ এই মরশুমে অন্যান্য বারের তুলনায় পর্যটকেরা কম আসছেন। যদিও বিভাগীয় বনাধিকারিক দাওয়া সাংমু শেরপা জানান, সরকারি নির্দেশে রাজ্যের সমস্ত অভয়ারণ্য ও ইকো ট্যুরিজম স্পট গুলিতেই এই নিয়ম লাগু হয়েছে।
কী কী রয়েছে এই পক্ষী নিবাসে?
রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, যা কুলিক পাখি অভয়ারণ্য নামে পরিচিত। পাখি পর্যবেক্ষকদের স্বর্গ। বিশাল জাতের পাখির এই আশ্রয়স্থলটি রায়গঞ্জের কাছে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলা। অভয়ারণ্যে প্রায় ১৬৪ প্রজাতির পাখি রয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার পরিযায়ী পাখি আসে এই অভয়ারণ্যে। ১.৩০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বিস্তৃত অভয়ারণ্যটি এশিয়া জুড়ে বৃহত্তম পাখি অভয়ারণ্য। কুলিক পাখির অভয়ারণ্য ইংরেজদের আকৃতি ধারণ করেছে বর্ণমালা “U” এবং কৃত্রিম খালের একটি জটিল নেটওয়ার্কের সাথে কুলিক নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। রায়গঞ্জ পাখি অভয়ারণ্য যার আয়তন ৩৫ একর এবং বাফার এলাকা ২৮৬.২৩ একর, একটি রঙিন পাখি বিস্তৃত অ্যারের জন্য আদর্শ বাসস্থান। আবাসিক পাখিদের মধ্যে রয়েছে ফ্লাইক্যাচার, ঘুড়ি, পেঁচা, কাঠঠোকরা, কিংফিশার, ড্রোঙ্গো এবং আরও অনেক কিছু। এ ছাড়া উপকূলীয় এলাকা এবং দক্ষিণ এশীয় এলাকা থেকেও প্রতি বছর এখানে প্রচুর পরিযায়ী পাখি উড়ে আসে দেশগুলি প্রধান পরিযায়ী প্রজাতির মধ্যে রয়েছে ইগ্রেট, ওপেন-বিল স্টর্ক, কালো-মুকুট নাইট হেরন, পন্ড হেরন, ইন্ডিয়ান শ্যাগ, লিটল কর্মোরেন্টস । পাখি ছাড়াও, অভয়ারণ্যের উদ্ভিদ সংগ্রহও আকর্ষণীয়।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে