সনৎ ঝা ও বাচ্চু দাস, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি পুরসভা দখলের লক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিল বিজেপি। নাম না করে পুর প্রশাসক গৌতম দেবকে বিঁধলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। পাল্টা বিজেপির পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। দুই দলকে আক্রমণ করেছে বামেরা।

এক বছরেরও বেশি ধরে শিলিগুড়িতে নেই পুরবোর্ড। শিলিগুড়ি-সহ পাঁচটি কর্পোরেশনের বকেয়া ভোট ২২ জানুয়ারি সেরে ফেলতে চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে এমনই প্রস্তাব দিয়েছে তারা। এই প্রেক্ষাপটে নাম না করে গৌতম দেবকে খোঁচা দিয়ে দ্রুত ভোটের দাবি জানালেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁর কটাক্ষ, ‘বকলমে হেরে যাওয়া মানুষদের পুনর্বাসনের জায়গা হিসেবে পুরসভার প্রশাসক পদ যাতে ব্যবহৃত না হয়, তার জন্য চাই জনগণ দ্বারা নির্বাচিত বোর্ড।’

বিধানসভা ভোটের পর সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যকে সরিয়ে পুর প্রশাসক পদে আনা হয় তৃণমূল নেতা গৌতম দেবকে। রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন বিজেপি বিধায়ক। পাল্টা বিজেপির পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসক দল। শঙ্কর ঘোষকে আক্রমণ করে গৌতম দেব বলেছেন, ‘দু’দিনের যোগী, ভাতকে অন্ন বলছে। বাম থেকে রামে। কোন নীতিগত অবস্থান থেকে এসেছে তা আগে পরিষ্কার করুক। বিজেপির এতগুলো এমপি জিতল দার্জিলিঙে। এত বছর ধরে আছে। কী কাজ হয়েছে এখানে?’

২০১৫-র পুরভোটে শিলিগুড়ির ৪৭টি আসনের মধ্যে, ২৩টিতে জেতে বামেরা। তৃণমূলের দখলে যায় ১৭টি ওয়ার্ড। কংগ্রেস ৪, বিজেপি ২ ও নির্দলের দখলে ছিল একটি ওয়ার্ড। নির্দলের সমর্থনে বোর্ড গড়ে বামেরা।

এবার বিধানসভা ভোটে শিলিগুড়ি আসনে বড় ব্যবধানে জিতেছে বিজেপি। বিধানসভা ভোটের নিরিখে ৪৫টি ওয়ার্ডে এগিয়ে আছে গেরুয়া শিবির। দু’টি ওয়ার্ড লিড তৃণমূলের। বিধানসভা ভোটের প্রেক্ষিতে বিজেপির শক্তি অনেকটা বাড়লেও, বামেদের দাবি, পুরভোট হলে ফল অন্যরকম হবে। 

সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক বলেছেন, ‘কলকাতায় যেভাবে আমাদের ভোট শতাংশ বেড়েছে, তাতে মানুষ বুঝেছে বিজেপি ও তৃণমূল একই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। মানুষ ইতিবাচকভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এখানে বিজেপির কী অবদান আছে?’

পাল্টা শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়কের দাবি, ‘শিলিগুড়ি পুরভোটের জন্য আমরা তৈরি। যেদিনই ভোট হোক আমরা বোর্ড গড়ব। বামপন্থীদের কোনও ক্ষমতা নেই।’

ভোটের দিন চূড়ান্ত না হলেও, শিলিগুড়ি পুরভোটকে সামনে রেখে তৎপর সব শিবিরই।