কলকাতা : সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রবিবার তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন অর্জুন সিং (Arjun Singh)। কিন্তু, গেরুয়া শিবিরে ভাঙনের কি এই শেষ ? নাকি তাঁর পথেই ফিরতে চলেছেন আরও কেউ। এনিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনার মধ্যেই বিজেপির সৌমিত্র খাঁকে (Saumitra Khan) নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য অর্জুন সিংয়ের। তিনি বলেন, "সৌমিত্র আমার ভাই, তাড়াতাড়ি কিছু বলা ঠিক নয়। ওয়েট অ্যান্ড সি, অনেকে আসবে, এটা বলতে পারি।"


এনিয়ে সৌমিত্র বলেন, "বাঁকুড়া জেলায় যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস করেন, তাঁদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব ভাল। অর্জুনদা বিজেপির সাংসদ, আমিও। অপরূপা পোদ্দার তৃণমূলের সাংসদ, আমিও তৃণমূলের সাংসদ ছিলাম। সম্পর্কটা নিশ্চয়ই আছে। অর্জুনদার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ, এটা তো বলব না। শুধু একটা কথাই বলব, তোমার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন তৃণমূল কংগ্রেস করবেন না, আমি সেদিন তৃণমূলে ফিরে আসতে পারি। করাণ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীচে আমি পার্টি করব না, এটা আমার রাজনৈতিক এবং জীবনের সিদ্ধান্ত।"


আরও পড়ুন ; বাবার পিছু পিছু তৃণমূলে ফিরছেন পবনও! ছেলেকে নিয়ে যা বললেন অর্জুন


তৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন-


রবিবারের বারবেলায় তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন অর্জুন। প্রথমে ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সমন্বয় বৈঠকে যোগ দেন তিনি। তার পর যোগ দেন তৃণমূলে। ক্য়ামাক স্ট্রিটেই সাংবাদিক বৈঠক করেন অর্জুন। সেখানেই সাংসদ পদ না ছাড়ার কথা জানান তিনি। অর্জুন বলেন, "আমার সাংসদ পদে ইস্তফা দেওয়া উচিত। কিন্তু ২ তৃণমূল সাংসদ বিজেপিতে গিয়ে এখনও ইস্তফা দেননি। তাঁরা ইস্তফা দিলে একঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দেব।"


ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন। ওই কেন্দ্র থেকে টিকিট পাওয়া নিয়ে মতান্তরের জেরেই ২০১৯ সালে বিজেপি-তে যোগ দেন। তার পর সেখান থেকে বিজয়ীও হন। কিন্তু সম্প্রতি বিজেপি-তে থেকেই 'বেসুরো' বাজতে শুরু করেন অর্জুন। পাটের দাম নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তার পর দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁর মান ভাঙানোর চেষ্টা করলেও, মন ভেজেনি অর্জুনের। বরং তৃণমূলে ফেরার জল্পনা উস্কে দেন তিনি।


বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন অর্জুন -


এর পর রবিবার সকালে কলকাতায় আগমন অর্জুনের। তাজ হোটেলে বসে ক্যামাক স্ট্রিটে যাওয়ার নির্দেশের অপেক্ষা করতে থাকেন। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে ঝালিয়ে নিতে শুরু করেন পুরনো সম্পর্কও। জানিয়ে দেন, রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই, সবকিছুই সম্ভব। কে, কী বলল তাতে যায় আসে না, জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলে ছিলেন, তাই মমতাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানিয়ে দেন অর্জুন। তার পরই বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ তাজ থেকে বেরোন অর্জুন। তৃণমূলের পতাকা লাগানো গাড়ি নিয়ে রওনা দেন অভিষেকের অফিসে। সেখানেই পুনরায় জোড়াফুলে যোগদান করেন।