আবির ইসলাম, বীরভূম: দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যুতে ফুঁসছে বিশ্বভারতী (Visva Bharati)। প্রশ্ন উঠছে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Bidyut Chakrabarty) ভূমিকা নিয়ে। তা নিয়ে এ বার সুর চড়ালেন প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অনুপম হাজরাও। একটি বারের জন্যও কেন উপাচার্য মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার তাগিদ অনুভব করলেন না , প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর মতে, একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এটুকু মানবিকতা কাম্য করাই যায়। 


বিশ্বভারতীর পাঠভবনের এক পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু ঘটেছে। ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার হয় তার মৃতদেহ। বিশ্বভারতী পাঠভবনের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল অসীম দাস। কীভাবে তার মৃত্যু হল, খতিয়ে দেখছে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। কিন্তু এই ঘটনায় মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে একবারই উপাচার্য সাক্ষাৎ করেননি বলে অভিযোগ। 


সেই নিয়ে উত্তাল বিশ্বভারতী। শুক্রবার রাতে শববাহী গাড়ি নিয়ে গেটের তালা ভেঙে উপাচার্যর বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে উপাচার্যর কথা বলার দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে উপাচার্যর বাসভবন চত্বর। শববাহী গাড়ি ঘিরে চলে তুমুল বিক্ষোভ। তাতে তৎপর হয় শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। উপাচার্যর বাড়ির সামনে জড়ো হওয়া কয়েকজনকে আটক করা হয়। বাড়ানো হয় বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যা। মোতায়েন রয়েছে পুলিশও। 



কিন্তু মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে এখনও কথা বলেননি উপাচার্য। বরং ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়ে উল্টে নিরাপত্তা চেয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন। উপাচার্যের এই মনোভাবের বিরুদ্ধে সরব বিভিন্ন মহল। তাতে নয়া মাত্রা যোগ করেছেন অনুপম। শনিবার টুইটারে তিনি লেখেন, 'বিশ্বভারতীতে ছাত্রের মৃত্যু যথেষ্ট বেদনাদায়ক। সদ্য সন্তানহারা বাবা-মায়ের আকুল আর্তির কথা মাথায় রেখে উপাচার্যের উচিত ছিল অন্তত একবার ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করা। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে অন্তত এটুকু মানবিকতা কাম্য'।


বিশ্বভারতীর হস্টেলে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রের কীভাবে মৃত্যু হল, এই প্রশ্ন তুলে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে গতকাল তাঁর বাড়ির সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ বসেন মৃত ছাত্রের মা-বাবা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন পড়ুয়াদের একাংশ। আন্দোলনকারীদের একাংশ গেট ভেঙে উপাচার্যের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন। প্রথম গেট ভেঙে দেন বিক্ষোভকারীরা। রাজ্যপাল ট্যুইট করে জানান, ঘটনায় আতঙ্কিত উপাচার্য বিদ্যুত্‍ চক্রবর্তী তাঁকে মেসেজ করে বলেন, ''দয়া করে নিরাপত্তা দিন, আমার জীবন ঝুঁকির মধ্যে আছে। পুলিশ নিরাপত্তা না দিলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।''


বিশ্বভারতীর উপাচার্যর বার্তা মুখ্যসচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে, বলেও ট্যুইটে জানান রাজ্যপাল। এরপরই ডিজিপি, জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে সতর্ক করা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান মুখ্যসচিব। ট্যুইট করে জানান রাজ্যপাল।