ঠাকুরনগর : আগামী ৯ জানুয়ারি ঠাকুরনগরের মতুয়াবাড়িতে যাবেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যাওয়ার আগেই বাগযুদ্ধ চরমে উঠল। 'পুলিশ নিয়ে ফোর্স দেখাতে এলে ওঁকে ঠাকুরবাড়িতে পুজো দিতে দেব না।' এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।
কী বলেছেন শান্তনু ঠাকুর ?
শান্তনু বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠাকুরবাড়িতে যেভাবে আসেন, ঠাকুরবাড়িতে ফোর্স দেখাতে আসেন পুলিশ ফোর্স নিয়ে। এভাবে যদি এসে থাকেন ওঁকে পুজো দিতে দেব না আমরা। পরিষ্কার কথা। কোনওভাবে ওঁকে পুজো দিতে দেব না এইভাবে যদি আসে। ধিক্কার মিছিল চলবে। হাজার হাজার মতুয়া জমায়েত হবে। ওঁর পিসি আগে ক্ষমা চাক, তারপরে পুজো দিতে আসবেন।"
পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, "এই শান্তনু ঠাকুর মতুয়া সম্প্রদায়কে ঠকিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। মিথ্যার পর মিথ্যা বলে তাঁদের কাছে ভোট নিয়ে তাঁদের আজ ভোটার লিস্ট নাম নেই। মুখ দেখানোর জায়গা নেই। আর এখন অন্যদের হুমকি দিচ্ছেন। এই ঠাকুরবাড়ি জনসাধারণের। উনি কে আটকানোর ? যে ইচ্ছা যেতে পারে। আর সেটাই তো হওয়া উচিত। এইসব দস্যিপনা, ভয় দেখানো, হুমকি-ধমকি, মেরে দেব-আটকে দেব এসব কী ভাষা ! পশ্চিমবঙ্গে সকলের সমান অধিকারে সকলে চলছে। যদি আটকানোর ক্ষমতা থাকে আটকাবেন, আমরাও দেখে নেব কী করে আটকান। শান্তিপূর্ণভাবে পুজো দিতে যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শান্তনু ঠাকুর বেশি উস্কালে ২০২৬-এর নির্বাচনে শোচনীয় পরজয়ের পরে ওঁকে দেশ ছেড়ে পালাতে হবে। অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন, ভাল ছিলেন, আবার অস্ট্রেলিয়ায় ফেরত যেতে হবে এই শান্তনু ঠাকুরকে।" আগেও অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ঠাকুরনগরের মতুয়াবাড়ি যাওয়া ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ২০২৩ সালের ১১ জুন । অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ যাত্রার মাঝে দফায় দফায় তেতে ওঠে মতুয়াবাড়ি চত্বর। বিক্ষোভ ও হাতাহাতিতে জড়ান তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকরা। গন্ডগোলের জেরে মূল মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন শান্তনু ঠাকুর। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে পাশের গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে গিয়ে পুজো দিতে হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগে ঠাকুরনগরের মতুয়াবাড়িতে অশান্তির ঘটনায় এক ব্য়ক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের নাম বরুণ বিশ্বাস। মমতা ঠাকুরের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করে গাইঘাটা থানার পুলিশ। ঠাকুরবাড়িতে মমতা ঠাকুরের অনুগামী ও শান্তনু ঠাকুর অনুগামীদের মধ্যে তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই ঘটনায় বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিকাশ ঘোষ সহ একাধিক শান্তনু ঠাকুরের অনুগামীদের নামে অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুর। গাইঘাটা থানায় দায়ের হয় অভিযোগ। অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।