ময়না: প্রকাশ্য সভা থেকে ফের তৃণমূলকে ধারাল আক্রমণ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। বাংলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারকে কার্যত উৎখাত করার ডাক দিলেন তিনি। জানালেন, বাংলায় সরকারে এসে সুদ-সহ বদলা নিতে না পারলে রাজনীতি থেকে সরে যাবেন তিনি। পুলিশ না থাকলে তৃণমূলকে (TMC) খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেও মন্তব্য করলেন। 


মমতাকে চোরেদের মক্ষীরানি বলে উল্লেখ শুভেন্দুর


শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় সভা করেন শুভেন্দু। সেখান থেকেই তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছি আমি। কিন্তু একটা কাজ একার দ্বারা হবে না। রাজ্য জুড়ে লুঠ চলছে। কায়েম হয়েছে জঙ্গলরাজ। এ রাজ্যে ব্যবসার পরিবেশ নেই। চারিদিকে লুঠ আর লুঠ। ২৮ টাকার দেশি মদ, ডিয়ার লুঠ আর ৫০০ টাকার ভাতা রয়েছে শুধু। চোরেদের মক্ষীরানি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। তার জন্য আপামর জনগণের এগিয়ে আসা উচিত।"


পুলিশ না থাকলে তৃণমূলকে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেও এ দিন দাবি করেন শুভেন্দু। তিনি জানান, ২০২১ সালের মার্চ মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ৫০টির কাছাকাছি এফআইআর করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ। তৃণমূলের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে শুভেন্দু বলেন, "পুলিশ ছাড়া, পুলিশকে ময়না থানায় রাখো। আর বাকচার মাঠটা আমাদের খেলতে ছেড়ে দাও। একটাও থাকবে না। বাকচার খাল পেরিয়ে পালাতে হবে।"


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: ‘মানুষের অধিকারের টাকা আটকে রাখে, এমন নেতা দেখেছেন কখনও’! দিল্লি থেকে বকেয়া ছিনিয়ে আনার হুঁশিয়ারি অভিষেকের


এ দিন শুভেন্দু অভিযোগ করেন, ২০২১ সাল থেকে বিজেপি কর্মীদের উপর একের পর এক মামলা হয়েছে। ঘরছাড়া বহু বিজেপি পরিবার অন্যত্র বসবাস করছে। হার্মাদ বাহিনীর হাতে, তোলাবাজ পুলিশের প্রশ্রয়ে আট জন প্রাণে মারা গিয়েছেন। পঙ্গু হয়েছেন চার জন। অত্যাচারিত মহিলা ৮৪, শিশু ৩১, অত্যাচিরত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ১২জন। বাড়িঘর ভাঙচুর হয়েছে। শুভেন্দু প্রশ্ন তোলেন, "এর জন্যই কি ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিয়েছিলেন মানুষ? এই কি শান্তির পশ্চিমবঙ্গ? এর জন্যই কি বদলা নয় বদল চাই স্লোগান উঠেছিল? এর জন্যই কি নন্দীগ্রাম, নেতাইয়ে লড়াই করেছিলাম আমরা? "


মমতা সরকারকে হটিয়ে বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসবে বলেও এ দিন দাবি করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, "বিজেপি কখনও অতীত ভোলে না। আমনরা সরকারে আসব। হাতেগোনা কিছু দিন মাত্র। বেশি দিন লাগবে না। কথা দিলাম, সুদ-আসল সঙ্গে ইন্টারেস্ট, দণ্ডসুদ-সহ যদি বদলা নিতে না পারি, রাজনীতি থেকে সরে যাব। তৃণমূলের গলার সুর নরম হয়ে গিয়েছে। বীরভূমে যে গুড়-বাতাসা খাওয়াতো, এখন সে তিহাড়ে।"


বাংলায় তৃণমূল সরকারকে পুরোপুরি ব্যর্থ বলে উল্লেখ করেন শুভেন্দু


নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও এ দিন তৃণমূলকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। বলেন, "দরজা খুললে টাকার পাহাড়। গোটা শিক্ষা দফতর জেলে। ভাইপো আলিপুরদুয়ারে বড় বড় কথা বলেছে। আমফানের টাকা লুঠ করেছে তৃণমূল। ১০০ দিনের কাজের টাকায় দুর্নীতি করেছে। বড় ধেড়ে ইঁদুর ধরা পড়বে। তৃণমূলকে আর চুরি করতে দেব না। এই সরকার সবদিক থেকে ব্যর্থ।"