কলকাতা : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কনভয়ে হামলার ঘটনায় ধৃত কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতো-সহ (Rajesh Mahato) ৪ জনের জেল হেফাজত। এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল ঝাড়গ্রাম আদালত। কাল রাজেশ-সহ ৪ জনকে ফের আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুনের চেষ্টা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, চুরি ছাড়াও একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এর আগে পেশায় শিক্ষক কুড়মি নেতাকে কোচবিহারে বদলি করা হয়। খড়গপুরের বানাপুর স্কুল থেকে কোচবিহারের চামটা আদর্শ বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। এই পরিস্থিতিতে রাজেশ মাহাতোর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর। প্রয়োজনে আইনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বিরোধী দলনেতার।


শুভেন্দু বলেন, "আমি রাজেশ মাহাতোকে বলব, আপনি এখনই আইনি লড়াই করুন। আপনি যদি নিজে পারেন ঠিক আছে। আর যদি আইনি লড়াইয়ে বিরোধী দলনেতার সাহায্যের প্রয়োজন হয়, আমি করব।"


গত পরশু অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কনভয়ের যাত্রাপথেই আছড়ে পড়ে কুড়মিদের ক্ষোভ ! ইটবৃষ্টি, মন্ত্রীর গাড়িতে ভাঙচুর চলে। তৃণমূলকর্মীদের মারধর করা হয়। ছুড়ে মারা হয় তৃণমূলের পতাকা। উঠল চোর চোর স্লোগান।


শুক্রবার সন্ধেয় কুড়মি বিক্ষোভে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় ঝাড়গ্রামের গড় শালবনিতে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি পেরিয়ে যেতেই শুরু হয় ইটবৃষ্টি। পাল্টা সুর চড়িয়ে অভিষেক বলেন, 'খেলা তুমি শুরু করছো, শেষ আমি করব। সুকান্তর কথায় বলি, আদিম হিংস্র মানবিকতার আমি যদি কেউ হই...।'


বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই গড় শালবনিতে জমায়েত করছিলেন কুড়মিরা। বিকেলের দিকে মিনিট ৪০ রাস্তা অরবোধও করা হয়। সন্ধেয়, দহিজুড়ির কর্মসূচি শেষ করে লোধাশুলির দিকে আসছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন, ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের উপর গড় শালবনিতে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিষেকের গাড়ি চলে যেতেই শুরু হয় মুহুর্মুহু ইটবৃষ্টি। মারধর করা হয় তৃণমূল কর্মীদের। 
বেশ কয়েকটি গাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। আহত হন ঝাড়গ্রাম থানার আইসি-সহ বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'গাড়ির পর গাড়ি থেঁতলে দিয়েছে, কোনও অভিযোগ থাকলে, শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলুন। রাজ্যের মন্ত্রীকে ইট ছুড়ে মারছেন। তৃণমূল কর্মীরা বাইকে করে যাচ্ছে, গলায় গামছা দিয়ে টেনা নামাচ্ছে। এ কী আন্দোলন?'


তৃণমূল সূত্রে দাবি, ঘটনার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কী হয়েছে তা বিষদে জানান তিনি। 


শুক্রবার রাতে এই ঘটনার পর কার্যত হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছিল অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের গলায়। এরপরই তৎপর হয় পুলিশ। রাত থেকেই শুরু হয় অভিযান। গ্রেফতার করা হয় ৪ জনকে। তাঁদের বিরুদ্ধে মোট ১৪টি ধারা দেওয়া হয়েছে। তারমধ্য়ে ৬টি জামিন অযোগ্য় ধারা। এরমধ্য়ে রয়েছে খুনের চেষ্টা, অপরাধমূলক ষড়য়ন্ত্র, সরকারি কর্মীদের মারধর, সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা ও মারধরের ধারা। হামলার অভিযোগে এই কুড়মি নেতাকেই সরাসরি অভিযুক্ত করেছিলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।