কলকাতা: রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তৃণমূল নেতাদের একে একে জেলে পোরা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। তৃণমূলের চার জনকে জেলে ঢোকালে, বিজেপি-র আট জনকে জেলে ঢোকানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই নিয়ে এবার মমতার গ্রেফতারির দাবি তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেই মর্মে ইমেলে চিঠইও পাঠালেন হেয়ার স্ট্রিট থানায়।
ইমেল করে হেয়ার স্ট্রিট থানার ওসি-কে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেছেন শুভেন্দু নিজেই। তিনি লেখেন, 'নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে হেয়ার স্ট্রিট থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে ইমেলে অভিযোগ জানিয়েছি। বিজেপি-র আটজনকে গ্রেফতারের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি, দলের হয়ে প্রতিজ্ঞা করেছেন। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকার মধ্যে পড়ে, সেখানেই ইমেলে অভিযোগ জানিয়েছি। আশাকরি ক্ষমতার অপব্যবহার এবং হুমকি নিয়ে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। ৭২ ঘণ্টা অপেক্ষা করব। পুলিশ যদি এফআইআর না করে, ACJM-এর দ্বারস্থ হব'।
আরও পড়ুন: TMC: 'নেত্রীর আমাকে আর প্রয়োজন নেই, তাই গুরুত্ব দিচ্ছেন না', ফের বিস্ফোরক তৃণমূল বিধায়ক
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে দলীয় সভায় মমতা বিজেপি নেতাদের গ্রেফতারির হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, "ওরা যদি আমার চার জনকে জেলে রাখে, আমি তাহলে দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, ওদের বিরুদ্ধে খুন এবং অন্য যে সব অভিযোগ রয়েছে, ওদের আটজনকে জেলে ভরব।" সেই নিয়ে রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "দম থাকলে সুকান্ত মজুমদারকে নিয়ে শুরু করুন। সকুান্ত মজুমদারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, আমার বাবা-মা, স্ত্রীর সম্পত্তির হিসেব নিন। আপনার পরিবারের সম্পত্তির হিসেবও বের করুন।"
বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, "আমাকে খুনের মামলা দেওয়া হয়েছে। কিছু এসে যায় না। সত্যের জয় হবেই।" সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "মমতাদি এখন রাতে ঘুমোতে পারছেন না। আইন আইনের পথে চলবে। আদালত বলবে। উনি কে?" এর পরই আইনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানান শুভেন্দু। সেই মতোই ইমেলে তিনি হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন।
এদিন সেই নিয়ে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী যদি রাস্তায় দাঁড়িয়ে হুমকি দেন, কার বিরুদ্ধে, আদালত-আইনের বিরুদ্ধে...কে গ্রেফতার হয়েছে, কেন গ্রেফতার হয়েছে, তাতে বিজেপি-র কী হাত রয়েছে? প্রত্যেক নেতা-মন্ত্রী দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে। বাড়িতে হানা দিলেই সম্পত্তি, টাকা-পয়সা পাওয়া যাচ্ছে। তার পরও উনি প্রতিহিংসার কথা বলছেন। মানুষ সব দেখছেন। আর কত নিচে নামবেন উনি। কিন্তু একজন শাসকের এমন আচরণ শোভা পায় না।"
যদিও এ নিয়ে শুভেন্দুকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেন, "যাঁর নিজের নাম সিবিআই-এর এফআইআর-এ রয়েছে। একাধিক অভিযোগ রয়েছে। রাজ্যের পুলিশকে চটিচাটা বলেন, তিনি মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়েছেন!"