কলকাতা: অবাঙালি রাজ্যপাল বাংলা শিখতে আগ্রহী। তার জন্য সরস্বতী পুজোয় রাজভবনে আয়োজন হয়েছিল প্রতীকী হাতেখড়ির (C V Ananda Bose)। সেই নিয়েই এই মুহূর্তে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যপালের বাংলা শেখার উদ্যোগে শামিল হয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোাপাধ্যায় (Mamata Banerjee), শাসকদলের অনেকেই। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠান থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন বঙ্গ বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। অনুষ্ঠান নিয়ে কটাক্ষ, বিদ্রুপও ছুড়ে দেন তাঁরা। আর এ সবের মধ্যেই চোখে পড়ল রাজভবনের অনুষ্ঠানে বিজেপি-র বর্ষীয়ান নেতা তথা বঙ্গ বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়ের (Tathagata Roy) উপস্থিতি। শুধু উপস্থিত থাকাই নয়, অনুষ্ঠান দেখে মুগ্ধ বলেও জানালেন। 


সরস্বতী পুজোয় রাজভবনে আয়োজন হয়েছিল প্রতীকী হাতেখড়ির


এ দিন বাংলায় প্রতীকী হাতেখড়ি হল রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষেদের মধ্যে কেউ না থাকলেও, দেখা গেল তথাগতকে। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুও উপস্থিত ছিলেন এ দিনের অনুষ্ঠানে। তবে অনুষ্ঠানে শামিল হলেও, রাজ্যপালের যা বয়স, তাতে হাতেখড়ি অনুষ্ঠান নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। তবে তথাগত জানান, এ দিনের হাতেখড়ি অনুষ্ঠান দেখে মুগ্ধ তিনি। অত্যন্ত রুচিশীল অনুষ্ঠান হয়েছে বলেও জানান। প্রতীকী হাতেখড়ির পর সৌজন্য ভাষণে একদিকে রাজ্যপাল যখন বাংলায় বক্তৃতা করেন, মমতা বক্তৃতায় ছিল মলয়ালির ব্যবহার। বাংলা এবং মলয়ালির এমন মিশেলেরও প্রশংসা করেন তথাগত।  


তবে তথাগত যেখানে অনুষ্ঠানে হাজিরা দেওয়া থেকে প্রশংসা, কিছুতেই ইতস্তত করেননি, রাজ্য বিজেপি-র নেতারা উল্টো অবস্থানই নিয়েছেন। বরং রাজ্যপাল হাসিমুখে শ্লেটে অ-আ লেখার আগের মুহূর্তেও অনুষ্ঠান নিয়ে বিদ্রুপ ছুড়ে দেন শুভেন্দু। হাতেখড়ির জন্য রাজ্যপাল ভুল শিক্ষক চয়ন করেছেন, এমন মন্তব্য ছুড়ে দেন দিলীপ। তার পাল্টা তৃণমূলও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তাদের। রাজ্যপাল বাংলাকে ভালবাসছেন, বাংলার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চাইছেন, বিজেপি নেতারা তা সহ্য করতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। 


আরও পড়ুন: C V Ananda Bose: হাতেখড়িতে 'জয় বাংলা', রাতেই দিল্লিযাত্রা রাজ্যপালের, শাহ-ধনকড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ!


রাজ্যপালের প্রতীকী হাতেখড়ি নিয়ে এই রাজনৈতিক উত্তাপ দিল্লিতেও পৌঁছে গিয়েছে। কারণ অনুষ্ঠান শেষে সৌজন্য ভাষণে 'জয় বাংলা' ধ্বনি শোনা যায় রাজ্যপালের মুখে, যা মূলত তৃণমূল ব্যবহার করে থাকে। এর পর পরই রাজভবন সূত্রে জানা যায়, রাতেই দিল্লি উড়ে যেতে হচ্ছে রাজ্যপালকে। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা অধুনা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের (যাঁর সঙ্গে মমতা সরকারের সংঘাত সর্বজনবিদিত) সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। 


রাজ্যপালের প্রতীকী হাতেখড়ি নিয়ে এই রাজনৈতিক উত্তাপ দিল্লিতেও পৌঁছে গিয়েছে


এই সাক্ষাৎ পূর্ব নির্ধারিত বলে যদিও জানায় রাজভবন। কিন্তু প্রতীকী হাতেখড়ির পরই তাঁর দিল্লিযাত্রা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাতে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে শুভেন্দুর মন্তব্য। কারণ রাজ্যপালের দিল্লি যাওয়া নিয়ে শুভেন্দু বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী এবং নন্দিনী রাজ্যপালকে লিখিত ভাষণে জয় বাংলা লিখিয়ে বলিয়েছেন। জয় বাংলা বাংলাদেশের স্লোগান। নিশ্চয়ই এটা রাজ্যপালকে অনেকে বলবেন।"