কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Santanu Banerjee) ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED)। গতকাল ১২ ঘণ্টা, আজ সাড়ে ৮ ঘণ্টা হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সিজিও থেকে বেরোলেন যুব তৃণমূল নেতা (TMC)। যুব তৃণমূল নেতা শান্তনুর বাড়িতে কী ভাবে এল নিয়োগ সংক্রান্ত নথি? ঘুষের টাকা পৌঁছত কোন প্রভাবশালীর হাতে? উত্তরের খোঁজে ইডি। কুন্তল ঘোষ এবং তাপস মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর পরিচয় কী ভাবে, শান্তনুকে প্রশ্ন ইডি-র, খবর সূত্রের। 


সাড়ে ৮ ঘণ্টা হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ


বৃহস্পতিবার ফের হুগলি জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা যুব তৃণমূল নেতা শান্তনুকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। গত শুক্রবার শান্তনুর বলাগড়ের বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড, শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করে ইডি। সেই সমস্ত নথি কীভাবে তাঁর কাছে এল? তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় যুব তৃণমূল নেতা শান্তনুকে।


ইডি সূত্রের খবর, বুধবার তাপস এবং কুন্তলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শান্তনু সম্পর্কে একাধিক তথ্য তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। সেই সমস্ত বিষয়েও প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। সূত্রের খবর, এই প্রেক্ষাপটেই কুন্তল এবং তাপসকে তিনি কী ভাবে চেনেন, প্রথম কী ভাবে পরিচয় হল, কে তাঁদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল, এই সমস্ত বিষয়েও তদন্তকারীরা শান্তনুকে প্রশ্ন করেন।


আরও পড়ুন: C V Ananda Bose: ধনকড় অধ্যায় অতীত! হাতেখড়ি অনুষ্ঠানে মমতার সঙ্গে খোশগল্পে রাজ্যপাল, ধারও মাড়ালেন না বিজেপি নেতৃত্ব

ইডি সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদে মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস দাবি করেছিলেন, ২০১৬ সালে আনন্দপুরে কুন্তলের ভাড়ার ফ্ল্যাটে ৩ জন মিলে একটি বৈঠক করেন। বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছিল, তা নিয়ে শান্তনুকে প্রশ্ন করেন তদন্তকারীরা। কুন্তল এবং তাপসের মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে শান্তনুর প্রসঙ্গ পাওয়া গেছে।


সে নিয়েও ইডির প্রশ্নের মুখে পড়েন শান্তনু। তাঁর বয়ান লিপিবদ্ধ ও ভিডিও রেকর্ড করা হয়। ইডি সূত্রের দাবি, শান্তনু জানিয়েছেন, তিনি একজন জনপ্রতিনিধি। বিভিন্ন লোক তাঁর কাছে আসেন। সমস্যার কথা জানান। সেই সূত্রেই নিয়োগ সংক্রান্ত নথি তাঁর হাতে আসে। তবে ব্যক্তিগত ভাবে তিনি কখনও কাউকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেননি বলেও জানান শান্তনু। কুন্তলের সঙ্গে চেনাশোনা কী ভাবে জানতে চাইলে শান্তনু জানান, কুন্তল হুগলির নেতা। সেই সুবাদে চেনেন। কিন্তু তাপসকে চেনেন না তিনি। ব্যক্তিগত ভাবে আলাপ নেই।


তাঁর বয়ান লিপিবদ্ধ ও ভিডিও রেকর্ড করা হয়

এখানেই তদন্তকারীদের প্রশ্ন, ব্যক্তিগতভাবে না চিনলে কী ভাবে কুন্তল ও তাপসের সঙ্গে যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বৈঠক করলেন? কী ভাবেই বা তাঁদের মধ্যে হোয়াটঅ্যাপ চ্যাটে কথা হত? পাশাপাশি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্কের লেনদেনের নথিও খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা।
এ দিন হেফাজতে থাকা কুন্তল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও, মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে ডাকেনি ইডি।