দীপক ঘোষ, সমীরণ পাল ও পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া:  বিজেপির মতুয়া-অস্বস্তি অব্যাহত। ইতিমধ্যে দলের একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন ৩ জেলার ৯ বিধায়ক। এবার বনগাঁয় মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রায় ৮০০ সদস্য বিজেপি ছেড়ে যোগ দিল তৃণমূলে। এবছর বিধানসভা নির্বাচন, বিধানসভা উপনির্বাচন এবং কলকাতা পুর-নির্বাচন, কোথাও ভাল ফল করতে পারেনি বিজেপি।এরপর সাংগঠনিক স্তরে একাধিক রদবদল করেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু, তারপর থেকেই বিজেপির অন্দরে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। কার্যত সামনে চলেছে ফাটলও। নতুন কমিটিতে মতুয়াদের প্রতিনিধি না থাকায়, কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে, 


শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার ৫ মতুয়া বিধায়ক দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান। তাঁদের সমালোচনায় সরব হয়েছেন মতুয়া সম্প্রদায়েরই সদস্য, বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক। যদিও, সমালোচনা সত্ত্বেও এখনও নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ বিক্ষুব্ধরা।

বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার বলেন,  'বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় ভাল ফল করেছে বিজেপি, সে কারণে মতুয়াদের প্রাধান্য দিতে পারত, আমরা বিশ্বের বৃহৎ দল করি, সেই দলের নীতি আদর্শ আমাদের শেখায় না যে দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে রাস্তায় নামা বা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করা' 


বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া  বলেন, এই বিষয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই, আমার প্রতিবাদ থাকবেই, যা বলার দলের কাছে বলব। এই টানাপোড়েনের আবহে, সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘ তাৎপর্যপূর্ণভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করবে না। 


এই ঘোষণার পর সোমবারই বনগাঁয় মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রায় ৮০০ সদস্য বিজেপি ছেড়ে যোগ দেয় তৃণমূলে। যা নিয়ে শাসক বিরোধী শিবিরে শুরু হয়েছে তাল ঠোকাঠুকি। অন্যদিকে, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর---এই দুই সাংগঠনিক জেলাতেও সভাপতি বদল করার পর রবিবার একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ-ত্যাগ করেন জেলার চার বিজেপি বিধায়ক। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। 


অন্যদিকে এই বিষয়ে সাংসদ  সৌগত রায়ের মন্তব্য , দরজা খুললে সব বিজেপি বিধায়ক চলে আসত তৃণমূলে। পাল্টা দিলীপের পাল্টা দাবি, কে কোথায় বেরিয়ে যাচ্ছে তার গুরুত্ব নেই !


সোমবার বিজেপির পরিষদীয় দলের ভার্চুয়াল বৈঠকেও অসন্তোষের আঁচ পড়েছে। বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর জেলা সভাপতি বদলের দাবিতে বৈঠক বয়কট করেন বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা, ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা, ও কোতুলপুরের বিজেপি বিধায়ক হরকালী প্রতিহার।




আরও পড়ুন :


জয়ী বামপ্রার্থীর সঙ্গে শপথের আগে সাক্ষাৎ জয়ী বিজেপি প্রার্থীর, কী কথা হল?



ইতিমধ্যেই দলের একাধিক গ্রুপ ছেড়েছেন ৩ জেলার ৯ বিধায়ক। নতুন কমিটি গঠনের পরে প্রথমে উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার ৫ মতুয়া বিধায়ক একাধিক গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। একদিন যেতে না যেতেই, রবিবার ফের বিদ্রোহ দেখা দেয় গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। এবার একই পথ অনুসরণ করেন বাঁকুড়া জেলার চার বিধায়ক।

বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর। এই দুই সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি বদল করার পরই একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ-ত্যাগ করেন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা। ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা। ইন্দাসের নির্মল ধাড়া। এবং সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি। যা নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।