শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: এক জন জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি, অন্য জন স্থানীয় বিধায়ক (BJP MLA And  TMC Zilla Parishad Vice Present At The Same Government Program) । দলীয় পরিচয় দেখলে, দু'জন দুই শিবিরের। তবে তাতে যে সৌজন্যে আটকায় না, তা প্রমাণ হয়ে গেল আরও একবার। একসঙ্গেই রাস্তা উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে হাজির রইলেন বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায় এবং জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ। ক্রমে বিরল হতে থাকা রাজনৈতিক সৌজন্যের সাক্ষী থাকল কোচবিহার জেলার ২ নম্বর ব্লকের মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু মানুষ।


পাশাপাশি...
সরকারি অনুষ্ঠানগুলিতে আমন্ত্রণ পান না, এমন অভিযোগ অতীতে একাধিক বার শোনা গিয়েছে বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের মুখে। সেই নিরিখে 'ইতিবাচক' ব্যতিক্রম কোচবিহারের ঘটনা। উত্তরবঙ্গের এই জেলার মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি রাস্তা উদ্বোধনে একেবারে উল্টো ছবি দেখল রাজনৈতিক মহল। আরআইডিএফ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা তৈরির জন্য মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজের সূচনা ছিল এদিন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের মধ্যে ছিলেন কোচবিহার জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ। আসেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায়। দুজনে একসঙ্গে উদ্বোধন করেন। তবে এ নিয়ে বিজেপি বিধায়ককে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত জেলা পরিষদের জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি। তিনি বলেন, ' জানতাম না যে ওখানে বিজেপি বিধায়ক আসবেন। তবে আমরা উন্নয়নে বিশ্বাসী। সকলে  নিয়ে উন্নয়ন আমাদের লক্ষ্য। আমরা রাজনীতি দেখি না। তাই জেলা পরিষদের কাজ হলেও উনি ছিলেন।' অনুষ্ঠানে হাজির থেকে বিজেপি বিধায়কও দেখলেন কী ভাবে উন্নয়ন করতে হয়, এটাও জানান জলিল আহমেদ। কী বললেন বিজেপি বিধায়ক?
তাঁর কথায়, 'স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের আমন্ত্রণে গিয়েছিলাম। জলিল সাহেব উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টা ভালো লেগেছে যে সেখানে আমন্ত্রণ পেয়েছি। আমরা সব সময় উন্নয়ন চাই। সকলের সঙ্গে এ কাজ করতে চাই। এই বিষয়গুলো যত বার হবে, ততই জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা সকলে কাজ করতে পারব।'


অন্য ছবি...
উত্তরবঙ্গের এই জেলায় রাস্তার কাজের সূচনায় যে ছবি দেখা গেল, তাতে রাজনৈতিক সৌজন্যের ছবি ধরা পড়লেও ক্রমেই এই ছবি বিরল হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দুর্গাপুজোর কার্নিভালের সময়ের কথাই ভাবা যাক। জেলায় জেলায় যখন কার্নিভালের প্রস্তুতি তুঙ্গে, তখন বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথাকেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার অভিযোগ করেছিলেন, শোভাযাত্রায় গেরুয়া শিবিরের কোনও সাংসদ-বিধায়ককে আমন্ত্রণ করা হয়নি। তৃণমূল অবশ্য জানিয়েছিল, মুখ্য়মন্ত্রীই সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বিজেপি ঢাক বাজাতে বাজাতে আসতে পারে। তবে বিতর্ক কম হয়নি।


আরও পড়ুন:চার জনের মৃত্যুতে ফিরল হুঁশ! ৬০টি জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পূর্ব রেলের