কলকাতা: গরুপাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) ম্যারাথন জেরা করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। তার মধ্যেই এ নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপি (BJP) সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। তাঁর অভিযোগ, নোটবন্দির সময় বীরভূম (Birbhum) থেকে ভিন্ রাজ্যে টাকা পাচার হয়েছিল। স্থানীয় মানুষও সে কথা জানেন। তাই অনুব্রতকে কোনও ভাবেই বাঁচানো যাবে না।
বীরভূম থেকে গাড়িতে চাপিয়ে টাকা পাচার, দাবি লকেটের
শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন লকেট। সেখান থেকেই একের পর এক অভিযোগ তোলেন তিনি। এ দিন লকেট বলেন, ‘‘শোনা যাচ্ছে, বীরভূমে প্রচুর বড় ব্যবসায়ী রয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের এই যে রাজত্ব, গরুপাচার, তাঁর এই সাম্রাজ্য, যার কোনও আয়ের উৎস নেই। ২০১৬ সাল থেকে একই কথা বলছিলাম। ওঁর টাকার উৎস কী, জানতে চেয়েছিলাম।’’
এর পর নোটবন্দির সময়কার কথা তুলে ধরেন লকেট। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নোটবন্দির সময় বীরভূমে একটি অনুষ্ঠােন বীরভূমে ছিলাম। সাকলে, রাতবিরেতে স্করপিওতে করে টাকা পাচার হয়েছে। এ রাজ্য থেকে ভিন্ রাজ্যে চলে গিয়েছে টাকা। সবাই জানে, ওখানকার স্থানীয় মানুষও জানেন। এ ভাবে কাউকে বাঁচাতে পারবে না। সিবিআই-ইডি নিরপেক্ষ তদন্ত করেছে। আশাকরি খুব তাড়াতাড়ি এর বিচার করবে তারা।’’
শনিবার সকাল ১০টা থেকে অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। শারীরিক অবস্থার জন্য মাঝে কিছুটা বিরতি দেওয়া হয়। আড়াইটে নাগাদ বাইরে থেকে মধ্যাহ্ণভোজ আসে অনুব্রতর জন্য। তার পর ফের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। তাতে সিবিআই-এর তরফে অনুব্রতর সামনে বেশ কিছু নথি তুলে ধরা হয়। সেগুলি দেখিয়ে গোটা মামলায় তাঁর এবং অন্য প্রভাবশালীদের কার কার কাছে, কত টাকা করে পৌঁছত, তা জানার চেষ্টা করেন গোয়েন্দারা।
সিবিআই সূত্রে খবর, তাদের কাছে যে নথিপত্র রয়েছে, সেই অনুযায়ী, ইলামবাজারের সুখবাজার পশুহাটে একসঙ্গে এনে রাখা হত গরু। এর পর বীরভূমের বিভিন্ন রাস্তাকে নিরাপদ প্যাসেজ হিসেবে ব্যবহার করে পাচার করা হতো বাংলা দেশে। তার জন্য অনুব্রত এবং প্রভাবশালীরা টাকার ভাগ পেতেন বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। তাই যাবতীয় নথি তুলে ধরে অনুব্রতর জবাব চাওয়া হচ্ছে।
অনুব্রতকে সকাল থেকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআই-এর
গরুপাচার মামলায় এর আগে গ্রেফতার হন সীমান্তক্ষীবাহিনীর প্রাক্তন কমান্ডান্ট সতীশ কুমার। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৩৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নে কর্মরত ছিলেন তিনি। ওই দু’বছরে সীমান্ত দিয়ে ২০ হাজারের বেশি গরু পাচার হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে সিবিআই। অভিযোগ, গরু পিছু ২০০০ টাকা করে পেতেন বিএসএফ কর্তারা। কাস্টমস অফিসাররা পেতেন ৫০০ টাকা করে। এর বাইরে, বীরভূম, মালদা এবং মুর্শিদাবাদকে গরুপাচারের সেফ প্যাসেজ হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রভাবশালীদের কাছেও নগদে মোটা টাকা পাঠানো যেত বলে অভিযোগ। সেই সব নথি সাজিয়েই অনুব্রতর জন্য প্রশ্ন সাজিয়েছেন গোয়েন্দারা।