নয়াদিল্লি : বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর টানা অত্যাচার চলছে। সংখ্যালঘুরা কার্যত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে প্রতিবেশী দেশে। যা নিয়ে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক কড়া বিবৃতি জারি করেছে আগেই। হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে এপার বাংলাতেও। শুভেন্দু অধিকারী-সহ সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন বিরোধী দলনেতা। এনিয়ে পেট্রাপোল সীমান্তে বিক্ষোভে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একবন্ধনীতে রেখে কার্যত তুলোধনা করেছেন শুভেন্দু। এবার এই ইস্যুর আঁচ পড়ল সংসদেও। 'সল্টলেকে সাহা ইনস্টিটিউটের পাশে রোহিঙ্গাদের ডেরা' আছে বলে রাজ্যসভায় চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। তিনি অভিযোগ করেন, 'পরমাণু শক্তি মন্ত্রক অনুমোদিত সংস্থার পাশে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ডেরা রয়েছে। বিধাননগর কমিশনারেটে জানিয়েও লাভ হয়নি। অনুপ্রবেশকে মদত দিচ্ছে তৃণমূল সরকার। রাজ্যে রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানানো হচ্ছে।'
সংসদে এদিন চাঁচাছোলা ভাষায় এই ইস্যুতে সরব হন শমীক। তিনি বলেন, "আপনাদের (তৃণমূলকে উদ্দেশ্য করে) কারণেই আজ এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই সরকারের (পশ্চিমবঙ্গ সরকার) অপদার্থতার জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেয়। কীভাবে সাহা ইনস্টিটিউটের পাশে ওরা বসে আছে, পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এভাবে কতদিন চলবে ? বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের কথা বলা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের ভিতরে এই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা জনসংখ্যাই পাল্টে দিয়েছে। ওই জায়গা (সাহা ইন্সটিটিউটের পাশ) থেকে এখনই ওদের সরানো হোক। এই দাবি জানাচ্ছি।"
বাংলাদেশে হিন্দুদের পরিস্থিতি এখন এমনই ভয়ঙ্কর যে অত্য়াচারের হাত থেকে বাঁচতে ভক্তদেরকে ধর্মীয় চিহ্ন গোপন করার পরামর্শ দিয়েছে ইসকন। আর এই পরিস্থিতিতে বারবার মঙ্গলবার সংসদে বাংলাদশে হিন্দুদের ওপর অত্য়াচারের প্রসঙ্গ তুললেন বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারও। তিনি বললেন, বাঙালি হিন্দুদের বেছে বেছে নির্যাতিত হতে হচ্ছে। তাদের মন্দির ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। আর্থিকভাবে তছরুপ করা হচ্ছে। রাতের বেলায় যেভাবে ধরে ধরে নিয়ে যাকে ধর্মান্তরিত করে ইসলাম করা হচ্ছে। কাঁটাতারের বেড়ার মধ্যে তারা অত্যাচারিত হচ্ছে। এপারে এসেও তাদের শান্তি নেই।
বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্য়াচার যত বাড়ছে, ইউনূস সরকারের বেপরোয়া মনোভাবও ততই সামনে আসছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ফেসবুকে কার্যত হুঙ্কারের সুরে লিখেছেন, শেখ হাসিনার সরকার বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার লোভে ভারত তোষণনীতিতে বিশ্বাসী ছিল। তবে ভারতকে বুঝতে হবে, এটা শেখ হাসিনার বাংলাদেশ নয়। এই বাংলাদেশ স্বাধীন, সার্বভৌম ও আত্মমর্যাদাশীল। এই বাংলাদেশ নির্ভীক একটি তরুণ সম্প্রদায়ের।
এই পরিস্থিতিতে বারবার একটাই প্রশ্ন জোরাল হচ্ছে, হিনদু নিধন বন্ধ করতে ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করবে মোদি সরকার?
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে