কলকাতা: রেশন বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে বিজেপির খাদ্যভবন অভিযান। সল্টলেকে বৈশাখী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মিছিল বিজেপির। জেলায় জেলায় দুর্নীতির প্রতিবাদে মিছিল। আলিপুরদুয়ারে জেলা বিজেপির বিক্ষোভ। বাঁকুড়াতেও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ বিজেপির (BJP)।
গত কয়েকদিনে জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতারির পর শুভেন্দু, দিলীপের তরফে একের পর এক তোপ দাগা হয়। আর সেই নিশানায় বাদ পড়েননি মমতাও।সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, 'বাকিবুর রহমানের আবিষ্কার হওয়ার পরে ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে, যে এটাতে বাকিবুর রহমান একটা ইন্সট্রুমেন্ট ছিলেন। কিন্তু বাকিবুর রহমানের প্রটেকটর, মেন্টর, গাইডার ছিলেন ১১ থেকে ২১ এর খাদ্যমন্ত্রী (২০১১-২০২১), উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের অত্যন্ত আত্মার আত্মীয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।'
শুভেন্দু আরও বলেন,' তিনি দীর্ঘ জেরার পর গ্রেফতার হওয়ার মধ্য় দিয়ে, এই দুর্নীতির কিংপিন তিনি আপাতত ইডির কাস্টডিতে গেছেন। কিন্তু আমরা মনে করি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সামনে ছিলেন। তাঁর তোলা অর্থের বড় অংশ, মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসকদলের কাছে গিয়েছে।এবং মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া, এই হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি, কখনই একজন জেলা স্তরের নেতার করা সম্ভব ছিল না।'
রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় ইডি-র হাতে একের পর এক গ্রেফতারি এবং চাঞ্চল্য়কর সব তথ্য় উঠে আসার পর অবশেষে নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য় সরকার। খাদ্য় দফতরের পোর্টালে, এবার বাকিবুর রহমানের সংস্থা। NPG রাইসমিল প্রাইভেট লিমিটেডকে হোল্ড করা হল। রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায়। ১৪ অক্টোবর গ্রেফতার হন ব্য়বসায়ী বাকিবুর রহমান। আর ২৭ অক্টোবর ইডি গ্রেফতার করে প্রাক্তন খাদ্য়মন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিককে।
ইডি সূত্রে দাবি, এই দুর্নীতির তদন্তে নেমে, তাঁরা বাকিবুর রহমানের পাহাড় প্রমাণ সম্পত্তির কথা জানতে পারেন। যার মধ্য়ে ছিল তাঁর একাধিক সংস্থাও। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, ৬টি এমন সংস্থার কথা জানা যায়, যেখানে আটা বণ্টন দুর্নীতির টাকা ঢুকেছিল। এর মধ্য়ে একটি সংস্থা ছিল NPG রাইসমিল প্রাইভেট লিমিটেড। এই সংস্থায় ১০ কোটি ৩০ লক্ষ ৯৭ হাজার ১০০ টাকা ঢুকেছিল বলে তদন্তে জানা যায়। সূত্রের খবর, জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক ও বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর খাদ্য় দফতরের পোর্টালে এই সংস্থাকে হোল্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুন, কোন কোন ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে চাল ও আটা গিয়েছে ? হিসেব চেয়েছে ED
নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য় সরকারের তরফে এই চালকলগুলিতে ধান পাঠানো হয়। তারপর এই চালকলগুলি থেকে রাজ্য় সরকার ধান নেয়। সূত্রের খবর,হোল্ড করার অর্থ এই চালকলগুলিতে রাজ্য় সরকার আর ধান পাঠাবে না। বছর তিনেক আগে রেশন বণ্টন দুর্নীতি নিয়ে মামলা করেছিল পুলিশও। ২০২০, ২১ ও ২২ সালে নদিয়ার ধুবুলিয়া, কোতোয়ালি ও নবদ্বীপ থানায় তিনটে FIR করে পুলিশ।