দীপক ঘোষ ও সত্যজিৎ বৈদ্য, কলকাতা : জেলায় জেলায় বিজেপির বিক্ষুব্ধদের ঐক্যবদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু। বাজেট অধিবেশন শেষ হলেই জেলা সফরে বেরোবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। এমনটাই জানিয়েছেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ জয়প্রকাশ মজুমদার (Jayprakash Majumdar)। তাঁর দাবি, পুরভোটের রণকৌশল নিয়ে জেলার কর্মীরা অন্ধকারে। গোটা বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য এড়িয়েছে বিজেপি। কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।


জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারি- পুরনো ২ নেতাকে সাময়িক বরখাস্তের শাস্তি। তা সত্ত্বেও বঙ্গ বিজেপির অন্দরে বিদ্রোহ থামার আপাতত কোনও লক্ষণ নেই। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ - জেলায় জেলায় বিজেপির বিক্ষুব্ধদের ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াস শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই।


বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবির সূত্রে দাবি, বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার পরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর জেলায় জেলায় যাবেন। উদ্দেশ্য, বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে কথা বলে, তাঁদের একছাতার তলায় নিয়ে আসা।


আরও পড়ুন ; ‘৩০ বছর পার্টি করার পর বরখাস্ত, যাবে কোথায়?’ রীতেশদের ক্ষোভ নিয়ে দিল্লির দরবারে শান্তনু ঠাকুর


সামনে শতাধিক পুরসভায় ভোট। বিক্ষুব্ধ শিবির সূত্রের দাবি, কীভাবে পুরসভা ভোটে লড়া হবে ? কোন কোন ইস্যুগুলিকে সামনে রাখা হবে ? তা নিয়ে দলের কর্মীরা কার্যত অন্ধকারে।


তা নিয়েই তারা প্রশ্ন তুলছে দলের রাজ্য নেতৃত্বের দিকে। এনিয়ে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, জেলায় জেলায় ক্ষোভের আগুন। যদি কমিটি না করা হয়, দায়িত্ব না দেওয়া হয়- তাহলে কে করবে এই নির্বাচন পরিচালনা ? বর্তমান রাজ্য কমিটির কাউকে পছন্দ হতেও পারে, নাও হতে পারে। কিন্তু, জেলার কমিটি করতেই ভয় পাচ্ছে। জেলায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে খবর পাচ্ছি। আরএসএসের কাছেও খুবই অস্বস্তিকর একটা পরিস্থিতি।


আপাতত গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের। রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, এই মুহূর্তে জয়প্রকাশ মজুমদার একটি সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন। টেম্পোরারি সাসপেন্ডেড, তার মানে এখনও উনি আমাদের দলেরই কর্মী। জয়প্রকাশ মজুমদারের কোনও বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।


গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়াতে কটাক্ষের সুর তৃণমূলের গলায়। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, বিজেপির মধ্যে একটা মুষলপর্ব চলছে-আদি বিজেপি বনাম তৎকাল বিজেপি বনাম পরিযায়ী বিজেপি। বিক্ষুব্ধরা জোটবদ্ধ হচ্ছেন। বিজেপির সঙ্গে বাংলার মানুষ, উন্নয়ন-এসবের কোনও সম্পর্ক নেই। গোটাটাই ওদের দলের পদ নিয়ে দখলদারী চলছে।


শেষপর্যন্ত বঙ্গ বিজেপির ডামাডোল সামাল দিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কী পদক্ষেপ নেয়, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।