পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : বাঁকুড়া শহরে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও তাঁর ছেলেকে কুপিয়ে খুনের পিছনে রয়েছে বাঁকুড়া পুরসভার আবাস 'দুর্নীতি'। এই অভিযোগ তুলে এবার বাঁকুড়ায় রাস্তায় নামল বিজেপি। বাঁকুড়া শহরে বিক্ষোভ মিছিল করার পাশাপাশি এদিন মাচানতলায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। বিজেপির অভিযোগ, অপরের জমির একাংশের উপর বাড়ি তৈরিতে অভিযুক্তকে আবাস যোজনার সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিল বাঁকুড়া পুরসভা। সেই বাড়ি ঘিরেই শুরু হয় দুই প্রতিবেশীর বিবাদ। যার অন্তিম পরিণতি জোড়া খুন। বাঁকুড়া পুরসভা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।


অভিযোগ, গত রবিবার সন্ধেয় সম্পত্তিগত বিবাদে প্রতিবেশী পরিবারের হাতে খুন হন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মথুরামোহন দত্ত ও তাঁর ছেলে শ্রীধর দত্ত। ঘটনায় আহত হন মথুরামোহন দত্তর স্ত্রী মল্লিকা দত্ত। বাঁকুড়ার নতুনচটি এলাকার ঘটনা। এর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধেয় পুলিশ ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রতিবেশী পিন্টু রুইদাস, তার স্ত্রী নমিতা রুইদাস ও তাদের দুই ছেলে মহেশ্বর ও বিশ্বেশ্বরকে গ্রেফতার করে। ঘটনার পর থেকেই অভিযোগের আঙুল উঠছে বাঁকুড়া পুরসভার বিরুদ্ধে। 


শহরের বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, সম্প্রতি বাঁকুড়া পুরসভা 'হাউস ফর অল' প্রকল্পে অভিযুক্তদের বাড়ি তৈরির টাকা পাইয়ে দিয়েছে । অভিযোগ, সেই টাকাতেই প্রতিবেশী মথুরামোহন দত্তর মালিকানাধীন জমির একাংশ দখল করে বাড়ি নির্মাণ করে অভিযুক্ত পিন্টু রুইদাস। সম্প্রতি মথুরামোহন দত্তর আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট পিন্টু রুইদাসের বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, আদালত বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়ার পর রাগে পিন্টু রুইদাস ও তার পরিবার প্রতিবেশী মথুরামোহন দত্ত ও তাঁর ছেলে শ্রীধর দত্তকে খুন করার পরিকল্পনা করে। 


এবার সেই ইস্যুকে সামনে রেখেই রাস্তায় নামল বিজেপি। বিজেপির দাবি, অন্যের জমি দখল করে বাড়ি করায় অভিযুক্ত ও তার পরিবারকে 'হাউস ফর অল' প্রকল্পে টাকা পাইয়ে দিয়েছিল বাঁকুড়া পুরসভা। সেই বাড়ি তৈরি করাকে কেন্দ্র করে গন্ডগোলের জেরেই খুন হতে হয়েছে মথুরামোহন দত্ত ও তাঁর ছেলেকে। তাই খুনের ঘটনার সমস্ত দায় বাঁকুড়া পুরসভার। 


যদিও বাঁকুড়া পুরসভার বক্তব্য, প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান চালিয়েই আবাস প্রকল্প মঞ্জুর করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে যখন দেখা যায়, অন্যের জমিতে ওই উপভোক্তা বাড়ি তৈরি করছে তখন প্রকল্পের বরাদ্দ টাকা পুরসভার তরফে আটকে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি এখন এই বিষয়টাকে নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করছে।