উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, আশাবুল হোসেন, অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গরু পাচার মামলায় জেলে অনুব্রত মণ্ডল। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পথে নেমে প্রতিবাদ করছেন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতেই সব বিরোধীদের উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ বার্তা দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে কার্যত মহাজোটের ডাক দিয়েছে বিজেপি।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ফেসবুক পোস্টেই মিলেছে এমন সুর। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, 'সময় এসেছে বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস ভেদাভেদ দূরে সরিয়ে, মানুষের একত্রিত হওয়ার।' দলীয় ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে এগিয়ে আসার ডাক দিয়েছেন তিনি। শুধু সুকান্ত মজুমদারই নয়, কার্যত এক সুর শোনা গিয়েছে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের গলাতেও। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
কী বার্তা সুকান্তর:
সুকান্ত মজুমদার ফেসবুকে লিখেছেন, 'সময় এসেছে বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস ভেদাভেদ দূরে সরিয়ে রেখে, বাংলার স্বার্থে, ১০ কোটি বাঙালির স্বার্থে, সকল শ্রেণির, সকল স্তরের, মানুষকে একত্রিত হয়ে, ভয়ের গ্যাস চেম্বার থেকে বেরিয়ে এসে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভুল নীতি খামখেয়ালিপনা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার এবং সরকারকে আয়না দেখানোর। আজ না করতে পারলে ভবিষ্যতের কাছে আমাদের জবাব দেওয়ার মতো কোনও উত্তর থাকবে না।'একই সুরে কথা বলেছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও। শিলিগুড়ি বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, 'তৃণমূলের অত্যাচার থেকে বাঁচতে হলে মানুষের মহাজোট দরকার। নেতৃত্ব দেবে বিজেপি।'
বাম-কংগ্রেসের খোঁচা:
এই নিয়ে কটাক্ষের সুর শোনা গিয়েছে সিপিএম-কংগ্রেসের গলাতেও। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'মহাজোট হবে। মানুষেরই হবে। সেটা তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে হবে। এখানে তৃণমূল আর দেশে বিজেপি একইভাবে চলে'। প্রায় একই সুরে আক্রমণ শানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, 'মমতা-মোদি হাত ধরে চলছে। মোদিকে খুশি করতে উপরাষ্ট্রপতি ভোটে প্রার্থী দেয়নি। মমতা খুশি কিনা মোদি জিজ্ঞেস করে। এখানকার বিজেপি নেতারা কী বলল, কিছু যায় আসে না।'
তৃণমূলের কটাক্ষ:
গোটা ঘটনায় খোঁচা দিতে ছাড়েনি তৃণমূলও। রাজ্যের শাসক দলের সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, 'আমাদের দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় অনেক দিন আগে থেকেই বলছেন জগাই-মাধাই। আমাকে পেগাসাস নিয়ে বলায় সাসপেন্ড হতে হয়। আর কংগ্রেস-সিপিএম নিয়ে নীরব থাকে৷ এখানেও আই এস এফের সাথে বামেদের জোট৷।'
সব মিলিয়ে রাজ্যে একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। এই আবহে বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই বার্তা ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের জল্পনা এখন তুঙ্গে।
আরও পড়ুন: মানবিকতার খাতিরে প্রত্যর্পিত জঙ্গির নিশানায় ভারত, ধরে ফেলল সেনা