শান্তনু নস্কর, সন্দেশখালী: সাপের কামড়ের রোগীকে আগে হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে ওঝা ঝাড়ফুঁক করায় সময় নষ্ট হওয়ায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালী থানার খুলনা গ্রামের মৃধা পাড়ায়। মৃতের নাম স্বপন মৃধা। গতকাল সন্ধ্যায় খুলনা গ্রামের বাসিন্দা স্বপন মৃধা স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পর হাত পা ধুতে পুকুরে যাওয়ার সময় পুকুর পাড়ে একটি বিষাক্ত কেউটে সাপ তাঁর পায়ে ছোবল দেয়। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে ওঠে স্বপন। তারপর বাড়িতে বলে নিজে নিজে স্থানীয় এক ওঝার কাছে যায়।
সেখানে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঝাড়ফুঁক করার পর অবস্থা বেগতিক বুঝে ওঝা হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলে, তখনি মৃত ব্যক্তি বাড়িতে এসে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে স্থানীয় খুলনা হাসপাতালে যায় প্রায় রাত দশটা নাগাদ। ততক্ষনে স্বপন বাবুর সারা শরীর জ্বালায় জ্বলতে থাকে। এরপর সেখানে চিকিৎসা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলে সেখানে নিয়ে আসার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন, গায়ে কেউটে সাপ জড়িয়ে নিশ্চিন্তে ঘুম মহিলার! ভিডিও দেখে শিহরিত নেটিজেনরা
ক্যানিং থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক সমরেন্দ্র রায় বলেন সাপের কামড়ের রোগীকে আগে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ায় সময় নষ্ট হয়েছে। ফলে প্রাণ হারিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
এর আগে পাথরপ্রতিমার অচিন্ত্যনগরে সাপের কামড়ে আট বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে ওঝার কাছে ঝাড়ফুঁক করানো হয়। অভিযোগ, দীর্ঘ সময় পর ওঝা জানান, তিনি কিছু করতে পারবেন না। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপর, ওঝাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। শনিবার, পাথরপ্রতিমা থানায় শিশুর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত ওঝাকে। এখনও বহু জায়গাতেই কুসংস্কারের ঘোর কাটেনি, সচেতনতা বাড়াতে হবে, বলছেন পাথরপ্রতিমার এক বিজ্ঞানকর্মী।