কলকাতা: ফের ফাটল-আতঙ্ক ফিরল বউবাজারে (Bowbazar Metro Disaster)।  ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্য এবার মদন দত্ত লেনের একাধিক বাড়িতে ফাটল। মেট্রোর টানেলে জল ঢুকতে থাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার পর, উপস্থিত হন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ (Sajol Ghosh)। যদিও একজন প্রতিবেশী হিসেবেই সমস্যা দেখতে এসেছেন বলে জানান তিনি। এলাকায় তার অনেক পরিচিতরাও রয়েছেন বলে দাবি করেন। এদিন উপস্থিত হন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের (Mahammed Salim) পাশাপাশি শাসকদলের হয়ে সুদীপ, তাপসেরাও।


এদিন দেখা যায় মেট্রোর টানেলের ভিতরে, টানেলের দেওয়াল ফাটিয়ে প্রবল বেগে বেরিয়ে আসছে জল। একঝলক দেখলে হঠাৎ জলপ্রপাত বলে ভুল হতে পারে। তীব্র বেগে টানেল ফুঁড়ে বেরিয়ে আসা জলের ধারা রুখতে গ্রাউটিং পদ্ধতিতে কাজ শুরু করেছেন মেট্রোর ইঞ্জিনিয়াররা। ফাটল রুখতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে কাজ।আজ ভোরে এই ফাটল স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখে পড়ে। এর জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে  ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।


আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই বাসিন্দারা ১০টি বাড়ি খালি করে দিয়েছেন। এলাকায় মোতায়েন হয়েছে পুলিশ। ফাটল ধরা বাড়ি ফাঁকা করে দিতে বলেন পুলিশ কর্মীরা। ঘটনাস্থলে মেট্রোর প্রতিনিধিরা এলেও তাঁরা বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। বউবাজারে মদন দত্ত লেনের উল্টোদিকে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের ৩টি বাড়িতেও ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল দেখা গেছে একটি ছাপাখানাতেও। সেখানে শুধু দেওয়ালে নয়, ফাটল ধরেছে মেঝেতেও। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলিতে বিদ্যুত্‍ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করেছে সিইএসসি।    


এদিন এই ইস্যুতে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেট্রোর রুট ঘুরিয়ে দেওয়ার কারণেই এই সব হচ্ছে। রাজনীতির স্বার্থে ঘোরানো হয়েছে মেট্রোর রুট। বউবাজারে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য আজ ভোরে মদন দত্ত লেনে কয়েকটি বাড়িতে ফাটল ধরা প্রসঙ্গে এই অভিযোগ করেন তিনি। 


ইতিমধ্যে মেট্রো কর্তৃপক্ষ মাটির নিচের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তবে গ্রাউটিং এর কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের জন্য আর্থিক সাহায্যের কথাও বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে মেট্রো।  এদিন বউবাজারের বিপর্যয় নিয়ে মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমের পরামর্শ , মেট্রো কর্তৃপক্ষের উচিত পুরো জায়গাটি সম্পূর্ণ ভেঙে নতুন করে সব বাসিন্দাদের জন্য বড় একটি বাড়ি করে থাকার জায়গা করে দেওয়া হোক। যাঁর যতটা জায়গা প্রাপ্য, তেমনভাবে বণ্টন করা হোক জায়গা। 


আরও পড়ুন, 'ছোটবেলায় আমি তিনটে বছর গান শিখেছিলাম', স্মৃতির শহরে মমতা


এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ও বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে আজ ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ সহ বিভিন্ন দলের নেতারা। সকাল থেকেই বাসিন্দাদের সঙ্গে রাস্তায় ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে।