কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী বঞ্চিতদের চাকরি দিতে চান। প্রাথমিক স্তরে ১২ হাজার চাকরি আমরা দ্রুতই দিতে পারব। বুধবার এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে এমনটাই বললেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এ দিন তিনি বলেন, 'আরও শূন্যপদ তৈরি হয়েছে, সেগুলোতেও দ্রুতই চাকরি হবে। এসএসসি নতুন নিয়ম তৈরি করছে। ওএমআর শিট যাতে ১০ বছরের জন্য সংরক্ষণ হয় তার ব্যবস্থা হচ্ছে। ধাপে ধাপে প্রতিটি ক্ষেত্রেই নতুন নিয়োগ হবে। বেনিয়মে যারা পেয়েছেন তাদের সরিয়ে নতুন নিয়োগের কাজ শুরু হয়ে গেছে।'


সময় যত গড়িয়েছে গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতিতে ততই সামনে আসছে তৃণমূল-যোগ। এ দিকে আদালতের নির্দেশে চাকরিচ্য়ুত অযোগ্য় প্রার্থীদের হয়ে, মঙ্গলবার কার্যত সওয়াল করেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। যা শুনে নিয়োগের দাবিতে রাস্তায় বসে থাকা আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, যোগ্য়তা থাকা সত্ত্বেও চাকরি না পেয়ে যাঁদের রাস্তায় বসে থাকতে হচ্ছে, তাঁদের যন্ত্রণা চোখে পড়ছে না কেন? 


মমতার ঘোষণা: একদিকে যখন শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগের আশ্বাস দিলেন শিক্ষামন্ত্রী। অন্যদিকে নবান্নে শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে ৪১ লক্ষ কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। আগামীদিনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ৪১ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কলকাতায় নিজেদের দফতর করছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। প্রায় দেড় হাজার কোটি বিনিয়োগ করছে তারা। সেখানেও হবে প্রায় ৩০ হাজার কর্মসংস্থান, নবান্নে শিল্পপতিদের নিয়ে বৈঠকে জানালেন মুখ্য়মন্ত্রী। আগামী ২১, ২২ ও ২৩ নভেম্বর, অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য় সম্মেলন। রাজ্য়ের ব্র্য়ান্ড অ্য়াম্বাসাডর হতে দেবকে অনুরোধ মমতার। নবান্নে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোমোশন বোর্ডের মিটিং শিল্পপতিদের নিয়ে বৈঠকে মুখ্য়মন্ত্রী। আর বৈঠক থেকে বিপুল সংখ্য়ক কর্মসংস্থানের ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।


শূন্য পদে নিয়োগের নির্দেশ: অন্যদিকে, সম্প্রতি ২০০৯-এর প্রাথমিকের দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাকরিপ্রার্থীদের শূন্য পদে নিয়োগের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ১৭ এপ্রিলের মধ্যে মেধার ভিত্তিতে শূন্যপদ পূরণের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।


চলতি মাসের শুরুতেই প্রাথমিক শিক্ষকদের শূন্যপদ পূরণের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ১৩ বছর ধরে চাকরির জন্য অপেক্ষার পর, গত ১৫ নভেম্বর, ২০০৯-এর প্রাথমিকের দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাকরিপ্রার্থীদের ১ হাজার ৫০৬ জনের নামের প্যানেল প্রকাশ করে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। ২০০৯-এর প্রাথমিকের দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাকরিপ্রার্থীদের শূন্য পদ ছিল ১ হাজার ৮৩৪টি। ১ হাজার ৫০৬ জনের নামের প্যানেল প্রকাশিত হওয়ায়


বাকি ছিল ৩২৮টি শূন্যপদ। এদিন, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়,মেধার ভিত্তিতে সেই শূন্যপদ পূরণের নির্দেশ দিয়েছেন। এর পাশাপাশি নির্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেছেন, ১৭ এপ্রিলের মধ্যে তালিকা প্রকাশ করে নিয়োগ করবে পর্ষদ। দীর্ঘদিন ধরে ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে আন্দোলন করছেন মামলাকারীরা অনেকেই।বহাইকোর্টের এদিনের নির্দেশে বড় জয় পেলেন তাঁরা। হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগ কবে হয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে আছেন চাকরিপ্রার্থীরা।