কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: তিনি নাট্যকার এবং পরিচালক। আর একদিকে তিনি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। মন্ত্রিত্বের দায়িত্বের ফাঁকেই তিনি বানিয়ে ফেলেছেন একটি সিনেমা- 'হুব্বা'। একসময়ে হুগলির ত্রাস হুব্বা শ্যামলের জীবন নিয়ে সিনেমা বানিয়েছেন মন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গে এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে 'বিস্ফোরক' রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)।
সাক্ষাৎকারের মাঝেই উঠে এসেছে শেখ শাহজাহানের প্রসঙ্গও। বাম জমানায় হুগলির হুব্বা শ্যামল ওই এলাকা কার্যত দাপিয়ে বেড়িয়েছিল। হেন কোনও অপরাধ ছিল না যা পুলিশের খাতায় হুব্বা শ্যামলের নামের পাশে ছিল না। সেই বাম জমানাতেই হুব্বাকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি, এখন কেন শেখ শাহজাহানকে ধরতে পারছে না পুলিশ? এই প্রশ্নের উত্তরে ব্রাত্য বসু বলেন, 'পুলিশ চাইলে সব করতে পারে।' তিনি আরও বললেন, 'পুলিশ সবসময়েই এফিশিয়েন্ট। পুলিশ রাষ্ট্রযন্ত্র, পুলিশ চাইলে সব পারে।'
ড্রাগ পাচার থেকে খুন, তোলাবাজি, সব অপরাধেই নাম জড়িয়েছিলেন ‘হুব্বা শ্যামলে’র। যার আসল নাম শ্যামল দাস। শোনা যায়, ঠান্ডা মাথার খুনি হিসাবে, তার কোনও জুরি ছিল না। তার, হাত ধরেই বাজারে এসেছিল 'পৈতে কাট'। অভিযোগ, যেভাবে পৈতে পরা হয়, ঠিক সেভাবেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে ফালা ফালা করে দিত সে। ‘হুব্বা শ্যামল’ ছিল নৃশংসতার মূর্তিমান রূপ।
ইদানিং রাজনৈতিক ব্যক্তির দুর্নীতি পরায়ণতা বারবার শিরোনামে এসেছে। কিন্তু এমন একজনকে সিনেমার জন্য বেছে নেওয়া হল যে বাম আমলের অপরাধ জগতের মূর্তিমান প্রতীক বলেই মনে করা হয়। তাহলে কি শিক্ষামন্ত্রীর বাম আমলই লক্ষ্য? এর উত্তরে ব্রাত্য বসু বলেন, 'সিনেমা বানাতে গেলে বাম আমল, ওই আমল কিছু হয় না। জমানা ধরে সিনেমা হয় না।'
প্রায় দেড় দশক ধরে পুলিশকে কার্যত নাকানি-চোবানি খাইয়েছিল ‘হুব্বা শ্যামল’। সেই সময়, রিষড়া, কোন্নগর-সহ হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা কাঁপত 'হুব্বা শ্যামলে'র নামে। পাশের জেলা হাওড়া এবং উত্তর ২৪ পরগনাতেও ছড়িয়েছিল তার অপরাধের কারবার। সেই ইস্পাত কঠিন মনের, ভয়ঙ্কর গ্যাংস্টার ‘হুব্বা শ্যামল’কে বড়পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন ব্রাত্য বসু। ২০১১ সালের জুন মাসে, হুগলির বৈদ্যবাটি খাল থেকে থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক সময়ে হুগলির ত্রাস, কুখ্যাত অপরাধী হুব্বা শ্যামলের দেহ৷ তার, শরীরেও ছিল 'পৈতে কাট'।
আরও পড়ুন: ২৭ মিনিটে ৩৪ কিলোমিটার! শেওড়াফুলি-আরামবাগ শাখায় বাড়বে রেল-গতি