ঝিলম করঞ্জাই, সন্দীপ সরকার, আবীর দত্ত, পার্থপ্রতিম ঘোষ ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : দীর্ঘদিন ধরেই সিওপিডির (COPD) সমস্যা সঙ্গী। মাঝেমধ্যে শ্বাসকষ্টও ভোগায়। বয়সের সঙ্গে ক্ষীণ হয়েছে দৃষ্টিশক্তিও। এই মুহূর্তে খাইয়ে দিতে হয় রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। এমনিতেই বার্ধক্যজনিত কারণে বেশ কিছুটা অসুস্থ তিনি। এর মাঝেই গত দিন চারেক যে সমস্যা বেড়ে গিয়েছিল আরও কিছুটা। শনিবার দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর বিশ্রাম নেওয়ার সময় প্রবল শ্বাসকষ্ট বোধ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Budhhadeb Bhattacharya)। চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখেন শরীরে অক্সিজেনের মাত্রাও কমে যায় অনেকটা। স্যাচুরেশনের মাত্রা ৬৮-তে নেমে যাওয়ার পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির কথা জানান চিকিৎসকরা।
হাসপাতালে ভর্তি হতে বরাবরই অনীহা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-র। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতির জেরেই কার্যত বাধ্য হয়ে জোর করে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উডল্যান্ডস হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়ে একটি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট অ্যাম্বুল্যান্স রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে নিয়ে আসে হাসপাতালে। সেখানে আনার পর প্রথমেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেওয়া হয় হাই ফ্লো নেজাল অক্সিজেনেশন। যারপর কেবিন নম্বর ৫১৬ নম্বরে রেখে সি প্যাপ সাপোর্ট সিস্টেম দেওয়া হচ্ছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। যে পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ানো হয় ও কমানো হয় কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা।
জানা যাচ্ছে, খানিকটা ঘোরের মধ্যে রয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে তাঁকে ডাকলে তিনি সাড়া দিচ্ছেন। হঠাৎ যেরকম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, সেই আপদকালীন পরিস্থিতিকেও আপাতত সামাল দেওয়া গিয়েছে। ৮ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-র চিকিৎসার জন্য। তাঁর হৃদযন্ত্রে কোনও সমস্যা নেই বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি চিকিৎসকরা দেখে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে যে অ্যান্টি বায়োটিক দেওয়া হয়, তাঁর মাত্রা পাল্টে দেন। আপাতত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আইসিতে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসায় রাখা হয়েছে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য হাসপাতালে পৌঁছনোর আগে সেখানে পৌঁছন তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য ও সন্তান সুচেতনা ভট্টাচার্য। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই যাবতীয় চিকিৎসা করা হবে বলেই জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, এমনিতেই বর্ষাকালে সিওপিডি-র সমস্যা বাড়ে বলেই জানান চিকিৎসকরা।
এদিকে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি জানান, চিকিৎসদের দক্ষ হাতে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন